নাজিম উর রহমান
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাপারেল ফাউন্ডেশন’ হলো বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংগঠন। যারা সরাসরি রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পের সাথে জড়িত ।এ সংগঠনটি ২০১৭ সালে একটা ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে । ২০২২ সালের ১৭ই জুন আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে। এতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জাকি হোসেন খান (ডিরেক্টর, স্নোটেক্স গ্রুপ) এবং সদস্য সচিব হয়েছন আরিফ আহমেদ (সিইও, জিপারস লেবেলস এ্যান্ড অ্যাকসেসরিজ) । ডিইউএএফ ২০১৭ সালে মাত্র ০২ সদস্যের উদ্যোগে অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে, বর্তমানে ডিইউএএফ ক্রমবর্ধমান একটি দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে আজ ৩৫০ জনের সক্রিয় একটি সংগঠনে রূপ নেয় । ডিইউএএফ একটি অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম । তারা গার্মেন্টস শিল্পের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে কর্মরত।
এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে এর সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা ও সমর্থন আদায় সহজতর করা এবং মূলত পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত ঢাবির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা। ডিইউএএফ তার বিভিন্ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চায়।
শুক্রবার “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাপারেল ফাউন্ডেশন” আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের রফিকুল ইসলাম খান অডিটোরিয়ামে আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশের পোশাক ও বস্ত্র শিল্পের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয়। এই আনুষ্ঠানিক যাত্রায় প্রায় দেড়শতাধিক সাবেক শিক্ষার্থী অংশ নেয় যারা অ্যাপারেল ও টেক্সটাইল নিয়ে কাজ করছেন।
সেমিনারে অতিথি হিসেবে ছিলেন মোঃ মনিরুজ্জামান, কান্ট্রি ম্যানেজার পিডিএস ফারিস্ট, এবং মোঃ আরিফ রাজ্জাক, কান্ট্রি ম্যানেজার, কিয়াবি ইন্টারন্যাশনাল সাপ্লাই সার্ভিসেস লিমিটেড। বিশেষ বক্তা হিসেবে ছিলেন জাকি হাসান খান, মহীউদ্দীন আলমগীর রবিন। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মতিউর রহমান (হেড অফ অপারেশনস, সারা লাইফস্টাইল, একেএম শোয়েব ( সিইও, নিউ স্টার হাই লুন), অমিত কে বিশ্বাস (হেড অফ অপারেশনস, চৈতী গ্রুপ), নাজমুল হুদা সুমন ( স্টুয়ার্ট পিটারর্স)। সেমিনারে বক্তারা বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির সঙ্গে পোশাকের গুণগত মানের উন্নতির দিকে বিশেষ নজর দিতে আহ্বান জানান। এছাড়া দেশের পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নের উপরে গুরত্ব আরোপ করেন বক্তারা।
এছাড়া অ্যাপারেল ফাউন্ডেশনের ৫ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি রয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেনঃ ১। যুগ্ম আহ্বায়ক- আব্দুল্লাহ আল মামুন তুহিন (এইচ অ্যান্ড এম) ২। সাংগঠনিক সম্পাদক- মোস্তাফিজুর রহমান (এইচ্এম) ৩। দপ্তর সম্পাদক- আবু নওশাদ (লি এন্ড ফাং) ৪। আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক- মূয়ীদ আদনান (স্কয়ার টেক্সটাইল) ৫। অর্থ বিষয়ক সম্পাদক- হাফিজুর রহমান (লাইফলং গ্রুপ) ৬। প্রচার সম্পাদক- ফরহাদ উদ্দীন (ইন্ডিপেন্ডেন্ট গ্রুপ) এবং কার্যনির্বাহী সদস্য সংখ্যা ১০ জন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাপারেল ফাউন্ডেশনের সদস্যরা ভবিষ্যতে পোশাকশিল্পে টেকসই স্থায়ীত্বে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আরিফ রাজ্জাক। পোশাকের গুনগত মান বৃদ্ধির মাধ্যমে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের টিকে থাকার উপর গুরত্ব আরোপ করেন মনিরুজ্জামান ।
এই সেমিনারের অতিথি জনাব এ কে এম শোয়েব তার আলোচনায় তুলে ধরেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শিল্পে ভাল করছে তা আমদের জন্য আশার খবর কিন্তু আমাদের আরও মনযোগী হতে হবে যাতে অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের ভাল মানের অর্ডারগুলো আমাদের দেশে আনতে পারি । তিনি বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলো যেমন ভিয়েতনাম, চায়নার সাথে কিভাবে পাল্লা দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায় এই ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। তার মতে, গার্মেন্টস শিল্পে ভাল করতে হলে প্রাইভেট সেক্টরের ভুমিকাও অনেক। তিনি তার বক্তব্যে অনলাইন বিজনেস প্লাটফর্মের ব্যাপারে সরকারের আরও সুদৃষ্টি কামনা করেন।
সংগঠনটির সদস্য সচিব আরিফ আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব সাবেক শিক্ষার্থী অ্যাপারেল নিয়ে কাজ করেন তাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, ভবিষ্যতে যেসব ঢাবি শিক্ষার্থী অ্যাপারেল নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী তাদের সুযোগ তৈরিসহ অ্যাপারেল ইন্ড্রাষ্ট্রির উন্নয়নে কাজ করাই অ্যাপারেল ফাউন্ডেশন কমিটির অন্যতম উদ্দেশ্য।