বদিউজ্জামান রাজাবাবু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অন্যদিনের মতোই চলছিল বিচারকাজ। একটি মামলার শুনানিতে আদালতে আট মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে আসেন এক অসহায় মা। চাঁপাইনবাগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারক হাকিম আমলি আদালতের বিচারক মোঃ হুমায়ুন কবীরকে বিষয়টি নাড়া দেয়। তিনি মামলার দুই আইনজীবীকে বলেন ‘বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চান।
আদালতের এ পর্যবেক্ষণ ও ঘটনার পূর্বাপর সম্পর্কে বলতে গিয়ে আইনজীবী আবদুল কালাম আজাদ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, গোমস্তাপুর উপজেলার নাদিম আলী ও শিউলি বেগমের পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়েছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর নানান কারণে তালাক হয়। তখন শিউলি বেগম ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এরপর ২০২১ সালের শিউলি বেগম বাদী হয়ে মামলা করে। আদালতে মামলা চলমান অবস্থায়ই ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর জন্ম নেয় সন্তান। প্রায় এক বছর থেকে মামলাটি চলছে। বুধবার শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। বাদী পক্ষের সাক্ষী শুনানি ছিল। ৮ মাসের সন্তান নিয়ে আদালতে ওই নারী আসলে বিচারক বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান। এরপর আমরা দুই আইনজীবী উভয় পক্ষকে নিয়ে স্যারের (বিচারকের) কামরায় যায়। বিকেল পৌনে ৩টার দিকে নিজ খাসকামরায়, বাদী-বিবাদী, তাদের স্বজন ও মামলার আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে কথা বলেন বিচারক। প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা, সমস্যা থেকে উত্তরণের চেষ্টা। শেষ পর্যন্ত মামলার বাদী ও বিবাদী উভয়েই আবারও একসঙ্গে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেন। কনের জন্য কেনা হয় শাড়ি, বরের জন্য শার্ট। ডাকা হয় কাজীকে। বিকেল ৪টার আবারও নতুন করে বিয়ে পড়ানো হয় গোমস্তাপুর উপজেলার নাদিম আলী ও শিউলি বেগমের।
নাদিম আলীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিচারক সাহেব নিজ উদ্যোগে মীমাংসা করে দিয়েছেন। আমাদের আবারও বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন জজ সাহেব। আমরা উভয়ই এ সিদ্ধান্তে খুশি। বউ-সন্তানকে নিয়ে আদালত থেকে বাড়ি চলে এসেছি।
চাঁপাইনবাগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক হাকিম আমলি আদালতের বিচারক মোঃ হুমায়ুন কবীর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০২০ সালে যোগদানের পর থেকেই নিজ উদ্যোগেই অনেক জটিল মামলা এভাবেই সমাধান করে আসছেন, তাঁর কৃতিত্বের প্রশংসায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার জনগণ, মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন সত্যি তিনি প্রশংসার দাবিদার তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ তিনি যতটুকু মানুষকে বুঝানোর বা সমাধানের চেষ্টা করছে তাতেই আদালতের অনেক মামলার জটলা কমে আসবে। সততা, ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে আগামীতেও নিজ দায়িত্ব পালনে সবার সহযোগিতা এবং দোয়া চেয়েছেন জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর।