নুরে আলম হাওলাদার, শরীয়তপুর প্রতিনিধি : নড়িয়ার পদ্মা পাড়ের ‘জয়বাংলা এভিনিউ’ এখন রূপ নিয়েছে ‘মিনি কক্সবাজারে’। ভ্রমণ পিপাসুদের উপচেপড়া ভিড়ে ‘জয়বাংলা এভিনিউ’ এখন হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখরিত। প্রতিদিনই বিনোদনের জন্য হাজারো মানুষ পরিবার নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন নড়িয়ার পদ্মা পাড়ে।
পদ্মার পলি মিশ্রিত পানিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিনোদন পাচ্ছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। শত বছরের পদ্মার ভয়াল ভাঙন রোধ করে পদ্মার ডান তীরের ১০ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধের ‘জয় বাংলা এভিনিউ নড়িয়া’ নামকরণ করে চলতি বছরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকেই প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। যা ঈদ উপলক্ষে বেড়েছে বহুগুণ। প্রতিদিন শরীয়তপুর ও আশপাশের জেলার ভ্রমণ প্রেমী মানুষ এখানে সপরিবারে এসে ঘুরে ফিরে আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন। পদ্মা পাড়ে নতুন এই পর্যটন কেন্দ্রে বিভিন্ন ফাস্ট ফুডের দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকান থেকে সুলভ মূল্যে বাংলা ও চাইনিজ খাবার ভ্রমণ পিপাসুদের পরিবেশন করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব জানান, পদ্মার ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের আওতায় ‘জয় বাংলা এভিনিউর’ কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। গত তিন বছরে নড়িয়ার পদ্মা পাড়ে একটি বাড়িও বর্ষায় ভাঙেনি। তাই গত বছর থেকে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম মহোদয়ের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা ও সহায়তায় ‘জয় বাংলা এভিনিউ নড়িয়ার’ সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে।
এখানে সোডিয়াম বাতি, ঝাউ গাছ, ওয়াকওয়েতে টাইলস, নদী পাড়ের সিড়ি ভ্রমণ পিপাসুদের নতুন মাত্রা যোগ করেছে । সব মিলে তিন বছর আগের ভয়াল পদ্মা পাড় এখন আনন্দ মুখর নতুন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ‘জয়বাংলা এভিনিউতে’ আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা ওয়াকওয়েতে হেঁটে বা বাঁধের পাশে বেঞ্চে বসে এবং নদীর তীরে ফেলে রাখা ব্লকের ওপর বসে পদ্মার পানিতে পা ভিজিয়ে বা স্পর্শ করে সময় পার করছেন। পদ্মা পাড়ের এমন অনিন্দ্য সুন্দর স্মৃতি ধরে রাখতে প্রিয়জনের সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত অনেকেই। পদ্মায় সূর্য উদয় ও সূর্যাস্ত দেখে অনেকেই এই ‘জয়বাংলা এভিনিউ’কে বলছেন মিনি কক্সবাজার। এ যেন সত্যিই মিনি কক্সবাজার।
নড়িয়ার কেদারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিহীর চক্রবর্তী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সহযোগিতা, দিক নির্দেশনা ও শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ কেএম এনামুল হক শামীমের একান্ত প্রচেষ্টায় প্রমত্ত পদ্মার ভাঙ্গন রোধ করে স্থায়ীভাবে তীর সংরক্ষণের পাশাপাশি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে গড়ে তোলা হয়েছে ‘জয়বাংলা এভিনিউ’। ফলে এখন আর পদ্মা পাড়ে কান্নার শব্দ শোনা যায় না, শোনা যায় আনন্দ ধ্বনি।
এ প্রসঙ্গে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মার ভাঙন রোধে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়েছেন বলেই আজ নড়িয়াকে নতুন পর্যটন এলাকায় পরিণত করা সম্ভব হয়েছে। এ সময় উপমন্ত্রী শামীম সরকারের সব দফতরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এক হাজার সাতশত কোটি টাকা ব্যয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা- নড়িয়া উপজেলার পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের আওতায় ১০ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ করে ‘জয়বাংলা এভিনিউ’ নড়িয়া পর্যটন এলাকা করা হয়েছে।