অনলাইন ডেস্ক ।।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে এ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তিনি।
এর আগে, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে বেলা ১১টায় কোল জেটিতে ২২০ নৌকা থেকে পতাকা নাড়িয়ে ও সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে তাকে অভিবাদন জানানো হয়। এর মধ্যে ১০০টি পালতোলা নৌকা, ১০০ নৌকায় ছিল প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন। প্রতিটি নৌকায় রঙ-বেরঙের পোশাকে দুজন করে ৪০০ জেলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। বাকি ২০ নৌকায় ছিলেন নিরাপত্তাকর্মীরা। করোনা মহামারির কারণে প্রায় দুই বছর পর এই প্রথম কোনও প্রকল্প উদ্বোধনে সরাসরি অংশ নিলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শনী করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেন।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৪৮ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। অথচ প্রকল্পশেষে ব্যয় হয়েছে ২৩০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ১৯ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। দেশের বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম যা প্রাক্কলিত ব্যয়সীমার চেয়ে কমে কাজ শেষ করলো। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চে এনডব্লিউপিজিসিএল এবং সিএমসির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। দরপত্র আহবান করা হয় ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। পরের বছর ২০১৬ সালের ২৯ মার্চে ঠিকাদারের সঙ্গে নির্মাণ (ইপিসি) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তী ৪৮ মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। নির্মাণশেষে ২০২০ সালের ফেব্র‚য়ারিতেই কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক উত্পাদন শুরু হয়। এরপর কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে এবং দ্বিতীয় ইউনিটে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় যথাক্রমে ২০২০ সালের ১৫ মে এবং একই বছরের ৮ ডিসেম্বর। বর্তমানে একই কমপ্লেক্সে আরেকটি পৃথক ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। সেই কেন্দ্রটির ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে ২১ শতাংশ এগিয়েছে।
এনডব্লিউপিজিসিএল সূত্র জানায়, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৩তম দেশ হিসেবে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় নাম লেখালো। এশিয়ায় চীন, তাইওয়ান, জাপান ও মালয়েশিয়াতে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এই প্রযুক্তির কেন্দ্রগুলোর মধ্যে চীন ও বাংলাদেশ শুধু ঢাকনাযুক্ত কোল ইয়ার্ড ব্যবহার করে। ফলে পরিবেশগত ঝুঁকি আরও কমানো সম্ভব হচ্ছে। কেন্দ্রটিতে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত কয়লা ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরোদমে কেন্দ্রটি চালু হলে দিনে ১৩ হাজার টন কয়লার দরকার হবে। বর্তমানে দৈনিক গড়ে অর্ধেক ক্ষমতায় চলছে কেন্দ্রটি। গত শনিবার ৫৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে কেন্দ্রটি। সঞ্চালন লাইন প্রস্তুত না হওয়ায় এটি পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদন চালু করতে পারছে না। চলতি বছরের মধ্যেই তা সম্ভব হবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।