বাংলাদেশ কন্ঠ প্রতিবেদক: ২০০০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা মামলায় ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম- মোঃ আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমান। গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত হতে জিহাদী বই, ০২ টি মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ ও কম্পিউটারের হার্ডডিক্স উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়। গত ০১ মার্চ (মঙ্গলবার) রাজধানীর খিলক্ষেত থানার খিলক্ষেত বাজার মসজিদ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি’র ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ। বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মোঃ আসাদুজ্জামান।তিনি বলেন, ২০০০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাঁর সফরসঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান সরকারী আদর্শ কলেজ মাঠ সভামঞ্চের পাশে মাটির নিচে একটি ৪০ কেজি ওজনের বোমা এবং হেলিপ্যাডের পাশে মাটির নিচে একটি ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। গ্রেফতারকৃত মোঃ আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমান মুফতি হান্নানের সাথে বোমা পুঁতে রাখার দায়িত্বে ছিল। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে বোমা দুইটি উদ্ধারের পর আজিজুল হক ওরফে শাহনেওয়াজ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে। তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত আজিজুল হক রানা ১৯৮৭ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরে জামিয়া আনোয়ারিয়া মাদ্রাসায় নূরানী বিভাগে ভর্তি হয়। উক্ত মাদ্রাসার ওস্তাদ ও হরকাতুল জিহাদের সক্রিয় সদস্য, মুফতি হান্নান এর অনুসারী, মাওলানা আমিরুল ইসলাম এর সংর্স্পশে আসে। মাওলানা আমিরুল ইসলাম তাকে হরকাতুল জিহাদ, বাংলাদেশে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। উক্ত মাদ্রাসায় মুফতি হান্নান, আব্দুর রউফ, আব্দুস সালাম সহ হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ এর বিভিন্ন সিনিয়র সদস্যগণের যাতায়াত ছিল এবং হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি) সদস্যদের উক্ত মাদ্রাসায় গোপন বৈঠক হতো। গ্রেফতারকৃত আজিজুল হক সংগঠনে যোগদানের পর অন্য ছাত্রসহ প্রশিক্ষণ ও তালিম নেয়ার জন্য হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি ইজহারের চট্টগ্রামের লালখান মাদ্রাসায় যায় এবং তালিম গ্রহণ করে। তালিম শেষে সেখানে সে বোমা তৈরি, আত্মরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। মুফতি হান্নান সংগঠনের অপারেশনাল কার্যক্রমের জন্য সাহসী জিহাদী বিশ্বস্ত কয়েকজন লোক সংগ্রহ করার জন্য মাওলানা আমিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। মাওলানা আমিরুল ইসলাম মোঃ আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমানকে নির্বাচন করেন। আমিরুল ইসলাম তাকে একটি পত্র লিখে দিয়ে পত্র সহকারে গোপালগঞ্জ বিসিক এলাকায় সোনার বাংলা সাবান ও মোমবাতি তৈরির কারখানায় পাঠায়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি মুফতি হান্নানের সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে মাওলানা আমিরুল ইসলামের দেওয়া পত্রটি দেয়। মুফতি হান্নান তাকে সংগঠনের নিয়মকানুন সম্পর্কে বুঝিয়ে দেয় এবং আজিজুল হকের নাম পরিবর্তন করে ছদ্মনাম ‘শাহনেওয়াজ’ প্রদান করে। সিটিটিসি প্রধান বলেন, আজিজুল হক নতুন নাম শাহনেওয়াজ পরিচয়ে আনুমানিক ১৫ দিন মোমবাতি প্যাকিং এর কাজ করে। গ্রেফতারকৃত আজিজুল হক বিশ্বস্ততা অর্জন করলে কার খানার পিছনে একটি কক্ষে গোপন বৈঠকে উপস্থিত থাকার অনুমতি পায়। কারখানায় মোমবাতি ও সাবান তৈরির আড়ালে বোমা তৈরির কাজ করতো। বোমা তৈরির কাজে আজিজুল হকসহ মোঃ ইউসুফ ওরফে মোসহাব, মেহেদী হাসান ওরফে আঃ ওয়াদুদ, ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক হোসেন, মোঃ মহিবুল ওরফে মফিজুর রহমান, শেখ মোঃ এনামুল হক, আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিস প্রমুখ জড়িত ছিল। তিনি বলেন, আজিজুল হক দীর্ঘ ২১ বছর বিভিন্ন ছদ্মপেশার আড়ালে নিজেকে আত্মগোপন করে রাখে এবং অত্যন্ত গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যায়। সে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে টেইলারিং, মুদি দোকানদার, বই বিক্রেতা, ড্রাইভ্রার এবং সবশেষ প্রিন্টিং ও স্ট্যাম্পপ্যাড বানানোর কাজ করতো ব্রিফিংকালে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মোঃ ইলিয়াস শরীফ, উপ-পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজন ইনভেস্টিগেশন বিভাগ) মোঃ শহিদুল্লাহ, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মোঃ মাহফুজুল ইসলাম উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগ) মোঃ ফারুক হোসেন, উপ- পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস বিভাগ), সিটিটিসি মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ইকোনমিক ক্রাইম এন্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং টিম), ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম , সহকারী পুলিশ কমিশনার (ইকোনমিক ক্রাইম এন্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং টিম) ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ মুহাম্মদ রাইসুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া ) আবু তালেব উপস্থিত ছিলেন। ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের অভিযানটি উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, এর নির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ইকোনমিক ক্রাইম এন্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং টিম) ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার (ইকোনমিক ক্রাইম এন্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং টিম) ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ মুহাম্মদ রাইসুল ইসলাম এর সহযোগিতায় পরিচালিত হয়।
মোবাইল চোরের পাশাপাশি চোরাই মোবাইল বিক্রয়কারীদেরও গ্রেফতার করবে পুলিশ
বাংলাদেশ কন্ঠ প্রতিবেদক: শুধু মোবাইল চোরকে নয়, চোরাই মোবাইল ফোন বিক্রয় কারীদেরও গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ...