বাংলাদেশ কন্ঠ প্রতিবেদক : অনলাইনে জুয়া (বেটিং) পরিচালনাকারী বাংলাদেশের দুই মাস্টার এজেন্টসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ তরিকুল ইসলাম ওরফে বাবু, রানা হামিদ ও মোঃ সুমন মিয়া।
তাদেরকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ডিবি-সাইবারের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম ও অর্গানাইজ ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুজুকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃতরা বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ঢাকা মেট্রো-গ-৩৮-০৩৫১ নম্বর প্লেটের একটি প্রাইভেটকার, নগদ ১১ লক্ষ ৮০ টাকা, ৪টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন, সিমকার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ২৩টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট জব্দ করে গোয়েন্দা পুলিশ। ২৩ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। এসময় গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ ফারুক হোসেন, গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান, অভিযান পরিচালনাকারী ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের ইনচার্জ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফউল্লাহ, এবং অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের ইনচার্জ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল হক ও মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবু তালেব উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত মোঃ তরিকুল ইসলাম বাবু, রানা হামিদ এবং সুমন মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া (বেটিং) খেলার সাইট থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি, সম্পদ অর্জন করেছে। তারা মূলত মোবাইল ব্যাংকিং/ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে অবৈধ অর্থের লেনদেন (ই-ট্রানজেকশন) করে থাকে। এরা www.mazapbu.com ও www.betbuzz365 live ঠিকানার দুইটি বেটিং ওয়েবসাইটের বাংলাদেশের মাস্টার এজেন্ট। তারা সাইটগুলোর মাস্টার এজেন্ট হিসেবে দেশের বাইরে থাকা সুপার এজেন্টের নিকট থেকে প্রতিটি PBU (নিজস্ব ভার্চুয়াল কারেন্সি) ৬০ টাকার বিনিময়ে ক্রয় করে থাকে। পরবর্তীতে লোকাল এজেন্টের নিকট প্রতিটি PBU ১০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রয় করে থাকে।তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকায় লোকাল এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে। উক্ত লোকাল এজেন্টে বেটিংয়ে অংশগ্রহণকারীর নিকট থেকে নগদ অর্থের বিনিময়ে প্রতিটি PBU ১৫০ টাকা নিয়ে বিক্রয় করে থাকে। এই কাজে অবৈধ অর্থের আদান-প্রদান মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টের মাধ্যমে করা হয়। এভাবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের অর্থ গ্রেফতারকৃত আসামীদের মাধ্যমে দেশের বাইরে চলে যায়। এরা ভুয়া ফেসবুক আইডি ও বিদেশি নাম্বারের মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপ খুলে বেটিং সাইডগুলো পরিচালনা করে ও গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করে থাকে। গ্রেফতার কৃতদের ব্যাংক একাউন্ট এবং মোবাইল ব্যাংক একাউন্টগুলোতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ খেলার ভয়াবহতা তুলে ধরে তিনি বলেন, অনলাইন জুয়া একটা নেশার মতো, এখানে একবার ঢুকলে নিঃস্ব হওয়া ছাড়া অন্য উপায় নেই। অংশগ্রহণকারীরা নিঃস্ব হয়ে যাওয়ায় পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে, আইন -শৃঙ্খলার উপর প্রভাব পড়ছে।
তিনি আর ও বলেন, রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ভারত থেকে এ সাইটগুলোর ডোমেইন ব্যবহৃত হয়। বিটিআরসি অনেক সাইট বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ প্রক্সি সার্ভার ব্যবহার করে এগুলো পরিচালনা করছেন। আমাদের পুলিশের মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে। সকলকে সামাজিকভাবে আরো সচেতনতা বাড়াতে হবে।
অনলাইন জুয়া পরিচালনা কারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, যারা এখনো এ অনলাইন জুয়ায় জড়িত আছেন আপনারা যদি এ খেলা ছেড়ে অন্য পেশায় না আসেন তাহলে আপ নাদের সকলের পরিণতি এদের মতো হবে। গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান, এর সার্বিক তদারকিতে ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইন ভেস্টিগেশন টিমের ইনচার্জ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফউল্লাহ, এবং অর্গানাইজ ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের ইনচার্জ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল হক এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
মোবাইল চোরের পাশাপাশি চোরাই মোবাইল বিক্রয়কারীদেরও গ্রেফতার করবে পুলিশ
বাংলাদেশ কন্ঠ প্রতিবেদক: শুধু মোবাইল চোরকে নয়, চোরাই মোবাইল ফোন বিক্রয় কারীদেরও গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ...