নিজস্ব প্রতিনিধি:
দিন দিন মানুষের বয়স ও কাজের চাপ বাড়ছে। আর এই চাপের কারণে অনেকেই হারিয়ে ফেলছেন তাদের স্মৃতিশক্তি ও জ্ঞানীয় ক্ষমতা। দক্ষতার সঙ্গে দৈনন্দিন কাজগুলো করা, চিন্তাভাবনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া ও ব্যবসায়িক সফলতা অর্জনের ক্ষেত্রে স্মৃতিশক্তি ও জ্ঞানীয় ক্ষমতা খুবই জরুরি।
গবেষণা দেখায় যে ব্যায়াম, ডায়েট এবং কিছু অ্যারোবিকস মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন নিজের জন্য কিছু সময় নিন। ৬টি অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে মস্তিষ্ক প্রখর হবে, জ্ঞানীয় ক্ষমতা বাড়বে।
ব্যায়াম: ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের আকার এবং শরীরের পেশীর সাথে সিন্যাপসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কে নতুন কোষ তৈরি হয়। এটি মস্তিষ্কে অক্সিজেনের মাত্রা এবং গ্লুকোজ সরবরাহ বাড়ায়। আর আপনি যদি প্রাকৃতিক পরিবেশে ব্যায়াম করেন, তাহলে আপনি বিনামূল্যে ভিটামিন ডি পাচ্ছেন।
নিয়মিত হাঁটা: সকাল-বিকাল নিয়মিত হাঁটলে স্মৃতিশক্তি বাড়বে। গবেষণা এটি প্রমাণ করেছে। যারা স্বাস্থ্য সচেতন তারা নিয়মিত হাঁটতে বের হন। হাঁটতে হাঁটতে কোনো বাক্য বা উক্তি মুখস্থ করলে তা আপনার মনে অনেকক্ষণ থাকবে।
সঠিক খাদ্য নির্বাচন: যেসব খাবার খুব পছন্দের সেগুলো খেলে মস্তিষ্কের ‘রিওয়ার্ড এরিয়ায়’ ডোপামিন রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে মনে খুশির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তবে মস্তিষ্কের শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশি পেটের দিকেও নজর রাখতে হবে। মানুষের দেহের পরিপাকতন্ত্রে ১০০ ট্রিলিয়নেরও বেশি অণুজীবের বসবাস। এরা মস্তিষ্কের সঙ্গেও সংযোগ রক্ষা করে চলে। মগজের সুস্থতার জন্য এই অণুজীবগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রাখা জরুরি। তাই নিজের স্মৃতিশক্তি ধরে রাখার ব্যাপারে খুবই সচেতন হন। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বেছে নিন। খাবারে রাখুন ছোট মাছ ও শাকসবজি।
অবসর: নিম্ন স্তরের চাপ স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। বিপদ বা দুঃখের সময়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মানসিক শক্তি দেয়। তবে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ মস্তিষ্কের জন্য খুবই খারাপ। তাই কাজের মাঝে অবসর সময় বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য অবসর খুঁজুন। ঘুরে আসুন কোনো অজানায়।
কল্পনার জগতে যোগ: কল্পনা শুধু মনকে নরম করে না স্মৃতিশক্তিকেও তীক্ষ্ণ করে। তাই শিশুদের সাথে সময় কাটান, তাদের সাথে খেলা উপভোগ করুন। রূপকথা পড়ার সময় আপনার কল্পনা জাগিয়ে তুলুন। এটি মস্তিষ্ককে সক্রিয় করবে।
সঠিক সময়ে ঘুম: স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ঘুম খুবই উপকারী। প্রতি রাতে তাড়াতাড়ি শুতে যান এবং ভোরে ঘুম থেকে উঠুন। কারণ ঘুম মস্তিষ্কের সক্রিয়তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। রাত ৯-১০ টার মধ্যে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। নিয়মিত ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান।
এছাড়া মন ও শরীর শান্ত রাখতে নিয়মিত মেডিটেশন করুন, গান শুনুন, প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন এবং সবার সাথে প্রাণ খুলে হাসুন।