নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এ হৃদপিন্ড হঠাৎ করেই কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এটি রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণও কমিয়ে দেয়, যার ফলে মস্তিষ্ক কয়েক মিনিটের মধ্যে কাজ করা বন্ধ করে দেয় ফলে রোগীর মৃত্যু হয়। অনেকেই হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টকে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক বলে ভুল করে তাকেন। আর হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া না হলে তাৎক্ষণিকভাবে হৃদরোগে মৃত্যু ঘটতে পারে।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হৃদরোগে মৃত্যুর প্রায় ৫০ শতাংশের জন্য দায়ী।
সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হল হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং চেতনা হঠাৎ করেই কমে যাওয়া। এটি হৃৎপিণ্ডে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে হয়। শরীরে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় হৃদযন্ত্র পাম্পিং করতে পারে না। এক্ষেত্রে হার্ট কাজ করা বন্ধ করে দিলে রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এ সময় রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়, আর তখনই যদি তার চিকিৎসা শুরু করা যায় তাহলে তিনি বেঁচে যেতে পারেন।
তাই অন্যকে বাঁচাতে সবার জানা উচিত কেন হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, এর লক্ষণ ও চিকিৎসা। এ প্রসঙ্গে ভারতের বেঙ্গালুরুতে ফোর্টিস হাসপাতালের পরামর্শক ইলেক্ট্রোফিজিওলজিস্ট ডা. জয়প্রকাশ শেন্থার বিস্তারিত জানিয়েছেন-
এসসিএ’র সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল অ্যারিথমিয়া। যা হৃৎপিণ্ডের বৈদ্যুতিক সিস্টেমে সমস্যার কারণে একটি অনিয়মিত বা অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন। হৃৎপিণ্ডের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা হৃদস্পন্দন এবং ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করে।
হার্টের স্বাভাবিক ছন্দে কোনো ব্যাঘাত ঘটতে পারে অ্যারিথমিয়া। এছাড়া করোনারি হার্ট ডিজিজ, জন্মগত হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক, ভালভুলার হার্ট ডিজিজ বা বড় হয়ে যাওয়া হার্টের মতো বিভিন্ন কারণেও হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এসসিএ-এর উপসর্গগুলি হঠাৎ করেই আকস্মিক এবং গুরুতরভাবে ঘটে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে- হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া, বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
এছাড়াও, মাথা ঘোরা বা হালকা মাথাব্যথা, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড় করা, ঘ্রাণ পেতে অসুবিধা ইত্যাদি। বেশিরভাগ রোগী এসসিএ শুরু হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে এই লক্ষণগুলি অনুভব করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনের মাধ্যমে এসসিএ‘র মতো হৃদরোগ প্রতিরোধ করা যায়।