আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের একটি স্কুলে যে শিক্ষক একজন মুসলিম ছাত্রকে তার সহপাঠীদের চড় মারার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তিনি তার আচরণে লজ্জিত নন। তিনি বলেন, তারা আইন বানিয়েছেন। কিন্তু স্কুলে শিশুদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এভাবেই তারা শিশুদের নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
ওই শিক্ষক আরও বলেন, ‘আমি এই গ্রামের শিক্ষক। সবাই আমার সাথে আছে।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) মুজাফফরনগরের খুব্বাপুর গ্রামের নেহা পাবলিক স্কুলে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি ত্যাগী। বিদ্যালয়ে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে।
অনলাইনে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে, একটি শিশুকে একপাশে দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখা যায় যখন শিক্ষক তিপ্তি অন্য শিশুদেরকে একে একে উঠে এসে শিশুটিকে চড় মারতে বলেন। ক্যামেরার পেছনে থাকা একজনের উদ্দেশ্যে তৃপ্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তো বলেই দিয়েছি, যত মুসলিম বাচ্চা আছে, তোমরা এখান থেকে চলে যাও।’
তৃপ্তি ত্যাগীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। তবে তৃপ্তি ত্যাগী বলেছেন, তিনি সাম্প্রদায়িুক দৃষ্টিকোণ থেকে এমন নির্দেশ দেননি। স্কুলে হোমওয়ার্ক না আনার জন্য মুসলিম ছাত্রটিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।
এই ঘটনায় তৃপ্তি ত্যাগীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ (এফআইআর) দায়ের করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার তদন্তের পর ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তারা প্রমাণ পেয়েছেন যে ওই শিক্ষিকা বলেছেন,‘এসব মুসলিম শিশুর মায়েরা তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার তদারক করেন না। তাদের শিক্ষা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।’
কেন তিনি ওই ছাত্রকে সরাসরি শাস্তি দেননি তা ব্যাখ্যা করে তৃপ্তি বলেন, শিশুটির বাবা-মা আমাকে তার সঙ্গে কঠোর হতে বলেছেন। আমি প্রতিবন্ধী, তাই আমি কিছু ছাত্রকে বলেছিলাম তাকে চড় থাপ্পড় দিতে যাতে সে তার বাড়ির কাজ করা শুরু করে।’
শনিবার তৃপ্তি ত্যাগী বলেন, এটি একটি ছোট ঘটনা তবে এটিকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। পুরো বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক ঘটনার মতো দেখাতে ভিডিওটি সম্পাদনা করা হয়েছে। শিশুটির চাচাতো ভাই ওই শ্রেণীকক্ষে ছিল। সেই ভিডিও ওই তৈরি করেছে। পরে তা বিকৃত করা হয়।