মারুফুর রহমান, শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মহারশি নদীতে রবারড্যাম স্থাপনে ৫ হাজার কৃষক পরিবারের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে খরচ কমেছে কৃষকের। অধিক উৎপাদনে হাসি ফুটেছে কৃষি পরিবারের মুখে।
উপজেলার নলকুড়া ও গৌরিপুর ইউনিয়নের ১৪ টি গ্রামের কৃষকদের শতশত একর জমিতে সেচ সংকটের কারনে শুধু আমন ধান উৎপাদন হতো। সরকার কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে জাইকা’র অর্থায়নে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৫ সালে মহারশি নদীর লনকুড়া এলাকায় একটি রাবারড্যাম নির্মাণ করে। ওই এলাকার কৃষকরা ২০১৭ সাল থেকে এ রাবারড্যামের পানির সেচ সুবিধা ভোগ করতে শুরু করে। প্রায় ১৫টি গ্রামের কৃষক সেচ সুবিধার আওতায় চাষাবাদ করছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক বলেন, রাবারড্যাম নির্মাণ করায় এসব এলাকার অনাবাদি জমিতে এখন অনায়াসে বোরো চাষ হচ্ছে। এতে বেড়েছে কৃষকদের উৎপাদন। রাবারড্যামের পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করার জন্যে ১৩শত সদস্য নিয়ে গঠন করা হয়েছে সমবায় সমিতি। প্রথম থেকে সেচ সুবিধার আওতায় কৃষক পরিবারের সংখ্যা কম হলেও এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে। সমিতি পরিচালনার জন্য প্রতি একর জমি থেকে সেচ মূল্য নেয়া হয় ৩ হাজার টাকা। স্বল্পমূল্যে সেচ সুবিধা পাওয়ায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে কৃষকদের সংখ্যা।
মহারশি নদীর পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, রাবারড্যাম নির্মাণ করায় এসব এলাকার জমিগুলো এখন আর সেচ সংকটের কারনে পতিত থাকছে না। এতে করে কৃষকরা স্বাবলম্বী হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস জানান, রাবারড্যামের পানি সেচ কাজে ব্যবহার করে প্রথমে ৫০০ একর জমি সেচের আওতায় আসে। পরবর্তীতে ১ হাজার একর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া হলেও বর্তমানে ৬ হাজার একর জমি সেচ সুবিধার আওতায় এসেছে। সুবিধাভোগী কৃষদের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার।
তিনি আরও বলেন, রাবারড্যামের পানি সরবরাহের জন্য পরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণ করা হলে সুবিধাভোগী কৃষকের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। কৃষকরা পাবে স্বল্প মূল্যে সেচ সুবিধা। এতে কৃষিক্ষেত্রে আসবে বৈল্পবিক পরিবর্তন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাবারড্যামের আওতায় কৃষকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষে বেশকিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প গুলোর মধ্যে রাস্তা, ড্রেন নির্মাণসহ এগ্রো বিজনিস সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। যাতে কৃষকরা সেখানেই তাদের উৎপাদিত ফসল বাজার জাত করতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন সৌন্দর্য বর্ধনের প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। কাজগুলো ইতিমধ্যে শুরু করা হয়েছে। কাজগুলো সম্পন্ন হলে রাবারড্যামের সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি কৃষকরা অধিকহারে এর সুফল ভোগ করবে।