রোজা রাখার পূর্বে কয়েকটি মেডিকেল টেস্ট জরুরি

রোজা রাখার পূর্বে কয়েকটি মেডিকেল টেস্ট জরুরি

লাইফস্টাইল

নিজস্ব প্রতিনিধি:
একটানা এক মাস রোজা রাখার জন্য শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা জরুরি। সারাদিন রোজা রেখে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ কারণে রোজা রাখার আগে কিছু মেডিকেল টেস্ট করা জরুরি।

ডাক্তাররা সাধারণত গর্ভাবস্থা, ডায়াবেটিস, হার্ট, কিডনি বা লিভারের রোগ এবং যে কোনও গুরুতর রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য রোজা রাখার পরামর্শ দেন না।
তাই আপনি কতটা ‘সক্ষম’ রোজা রাখতে পারেন তা দেখার জন্য আপনাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। যদি কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে সুস্থভাবে রোজা রাখতে পারেন। আর কোনো সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই রোজা রাখতে হবে।
জেনে নিন কোন কোন চেকআপ গুরুত্বপূর্ণ-

সাধারণ বডি চেকআপ-

এই চেকআপের মাধ্যমে আপনি বর্তমান স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন। একটি সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি কীভাবে কাজ করছে তার একটি ধারণা দেয়। সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত কিছু পরীক্ষা হল-

১. সম্পূর্ণ রক্তের গণনা (সংক্রমণ, রক্তাল্পতা এবং অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা প্রকাশ করে।)
২. থাইরয়েড স্ক্রীনিং (থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা এবং রোগ)
৩. কিডনি ফাংশন পরীক্ষা (কিডনি রোগ নির্দেশ করে)
৪. লিভার ফাংশন পরীক্ষা (লিভারের রোগ এবং ক্ষতির পরীক্ষা)
৫. মোট কোলেস্টেরল (হৃদরোগ এবং রক্তনালীর রোগের জন্য পরীক্ষা)
৬. রক্তে শর্করা (ডায়াবেটিস বা প্রাক-ডায়াবেটিসে পরিমাপ করা)

হার্টের স্বাস্থ্য পরীক্ষা-

আপনার যদি হৃদরোগের ইতিহাস থাকে বা ওষুধ সেবন করেন, তাহলে হার্টের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ভালো। এটি করার মাধ্যমে, আপনি আপনার হার্টের স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা পাবেন এবং ফলাফলের ভিত্তিতে আপনি একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।

আপনার যদি শ্বাসকষ্ট, গোড়ালি ফোলা বা ক্লান্তি থাকে, তাহলে আপনার হার্ট পরীক্ষা করা উচিত (আপনার বয়স নির্বিশেষে)।

ডায়াবেটিস পরীক্ষা-

যারা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য দীর্ঘায়িত উপবাস বিপজ্জনক হতে পারে। যাদের টাইপ ১ ডায়াবেটিস আছে তাদের ঝুঁকি বেশি।

এ কারণে রমজানে রোজা রাখার আগে ডায়াবেটিস পরিমাপ করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত রক্তে শর্করা এবং এইচবিএ১সি স্ক্রিনিং করা উচিত।

পেপটিক আলসার পরীক্ষা-

দীর্ঘায়িত অনাহার আলসার রোগীদের জীবন-হুমকির কারণ হতে পারে। আপনি যদি খাবারের সময় এবং পরে পেটে ব্যথা অনুভব করেন তবে রোজা শুরু করার আগে আপনাকে পেপটিক আলসারের জন্য পরীক্ষা করা উচিত।

কোভিড পরীক্ষা-

মনে হতে পারে এটি অতীতের জিনিস হয়ে উঠছে, কিন্তু কোভিড এখনও খুব বাস্তব। একটি সংক্রমণ বা পোস্ট-ইনফেকশন আপনার জন্য রমজানের রোজাকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে। এই কারণে, একটি কোভিড পরীক্ষা করুন।

ভিটামিন বি ১২ পরীক্ষা-

এটি একটি রক্ত পরীক্ষা যা আপনার শরীরে ভিটামিন বি ১২ এর মাত্রা প্রকাশ করে। এই ভিটামিন শরীরকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। কারণ এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য, রক্তকণিকা উৎপাদন এবং স্নায়ু স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে।

ভিটামিন বি ১২ এর অভাব দুর্বলতা, রক্তাল্পতা বা স্নায়বিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই রমজানের আগে এই পরীক্ষাটি করে আপনি রোজা রাখার জন্য নিজেকে আরও প্রস্তুত করতে পারেন এবং এর ঘাটতির কারণে স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারেন।

ভিটামিন ডি পরীক্ষা-

এটি একটি রক্ত পরীক্ষা, যা শরীরে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা প্রকাশ করে। একে সানশাইন ভিটামিনও বলা হয়। সূর্যের আলোর মাধ্যমে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। এই ভিটামিন সুস্থ হাড়, দাঁত, পেশী, স্নায়ু এবং ইমিউন সিস্টেমে সাহায্য করে।
শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে মেজাজ, দুর্বলতা, পেশির দুর্বলতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এ কারণে রমজানের আগে ভিটামিন ডি পরীক্ষা করা উচিত। এর মাত্রা কম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এর সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *