রুবেল হোসাইন, রংপুর প্রতিনিধি:
রংপুরে বৃষ্টির অভাবে নদী নালা খাল বিল পুকুরসহ জলাশয় গুলো পানি শূন্য থাকায় কৃষকরা পাট জাগ দিতে পারছেন না। অনেক কৃষক পাট কেটে জমিতেই ফেলে রেখেছেন। পাট কাটার ভরা মৌসুম হলেও কৃষকরা পানির অভাবে তা কাটতে দেরি করছেন। এ অবস্থায় কৃষকরা মহা বিপাকে পড়েছেন। আষাঢ় শ্রাবণ মাসের শুরুতে রংপুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। আষাঢ় ও শ্রাবন মাসে রংপুরে অধিকাংশ খাল বিল পানিতে ভরপুর থাকার কথা থাকলেও এখন শুকনো। কোন কোন জলাশয়ে সামান্য পানি থাকলেও পাট পচানোর জন্য তা যথেষ্ট নয়। অচিরে ভারী বৃষ্টি নাহলে সোনালী আঁশ পাট হবে চাষিদের গলার কাটা বলে মনে করছেন এ জেলার পাট চাষীরা।
রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রেমতে, রংপুর জেলায় এবার পাট চাষ হয়েছে, ৯ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে। তীব্র তাপদহ, অনাবৃষ্টি, রোদ এবং খরা থাকলেও বেশ কয়েকটি উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। মিঠাপুকুর উপজেলার কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অনেক কৃষক তাদের জমি থেকে পাট কেটে ডাঙায় তুলে রেখেছেন। আবার কেউ কেউ পাট ভ্যান যোগে অথবা কৃষক দিয়ে ঘাড়ে করে পাশ্ববর্তী জলাশয় গুলোর সামনে রাখছেন।
একরামুল নামে এক কৃষক জানান, তার প্রায় ৫৫ শতাংশ জমিতে এবার পাট চাষ করেছেন। পাট মোটামুটি ভালো হয়েছে, কিন্তু কোথায় জাগ দিবেন তা নিয়ে তার দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এখনও আশায় আছেন,যদি বৃষ্টি হয়,তবে নিজের জমিতেই জাগ দিতে পারবেন। তাতে খরচটা অনেকাংশে কম হবে।
উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের রশিদুল ইসলাম বলেন, হামরা বাহে প্রতিবার যে জমিতে পাট কাটি সেটে পাট জাগ দেই, এবার পানি নাই। তাই এলাও পাটগাছ কাটো নাই। দেখি আল্লাহ কি করে!
পীরগঞ্জের কুমেদপুর ইউনিয়নের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, আমার পাটগাছ কাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। কিছু পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। জায়গা খুঁজছি, যদি বৃষ্টি না হয় তবে সেচ দিয়ে পাট জাগ দিতে হবে।
এ বিষয়ে রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ওবায়দুর রহমান মন্ডল-বাংলাদেশ কন্ঠকে জানান, বৃষ্টির সম্ভবনা আছে। যেসব পাট এখনো কাটা হয়নি, যদি এরমধ্যে বৃষ্টি হয় তবে তেমন কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আশাকরি কৃষকরা সময় মত পাট জাগ দিতে পারবেন।