যাত্রাবাড়ীতে ‘ক্লুলেস’ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ১

অপরাধ জাতীয়

বাংলাদেশ কন্ঠ প্রতিবেদক: ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের একটি টিম। বৃহস্পতিবার ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতের নাম মোঃ আরিফ। গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত থেকে ছিনতাইকৃত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। রবিবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, গত ২২ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি. ভোর ০৫:১০ মিনিটে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে সংবাদ আসে ধলপুর এলাকায় একজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সংবাদ পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের দল যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন। থানা পুলিশের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ভিকটিমের কাছে থাকা জিনিসপত্র যাচাই করে তার পরিচয় সনাক্ত করা হয়। যার নাম খলু মিয়া (২৮)। তিনি ঢাকার নারায়ণগঞ্জের রূপসী এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী। ঘটনার দিন তিনি গাইবান্ধা থেকে সোনালী পরিবহনে করে রাত অনুমান ৩:৩০টায় যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগ এসে পৌঁছান। তিনি গোলাপবাগ থেকে পায়ে হেঁটে ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দিয়ে মায়ের দোয়া টায়ার অ্যান্ড ব্যাটারী শপের সামনে (হ্যাপি টাওয়ার এর পাশে) পৌঁছালে ওঁৎ পেতে থাকা কতিপয় ছিনতাইকারী ভিকটিমকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা রুজু হয়। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আরিফ জানায় সে এ ঘটনার সাথে জড়িত। একাধিক ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হওয়ায় সে দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক ছিল। কিন্তু উক্ত ঘটনায় পুলিশী তৎপরতা দেখে নিজেকে রক্ষা ও হত্যার ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য পূর্বের ওয়ারেন্টমূলে গ্রেফতার হওয়ার লক্ষ্যে নিজের বাসায় অবস্থান করেন। ঘটনার পরের দিন রাতে পুলিশ পূর্বের ওয়ারেন্টমূলে আরিফকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আরিফকে উক্ত ছিনতাই ও হত্যার ঘটনায় সনাক্ত করা হয়। থানা পুলিশের টিম জেলহাজতে গিয়ে আরিফকে সনাক্তপূর্বক এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রিমান্ডে আরিফ স্বীকার করে যে, সে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ঘটনার দিন রাতে একটি ছুরিসহ ধলপুর নতুন রাস্তায় একটি ব্যাটারীর দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। ভিকটিম রাস্তা দিয়ে আসার পথে তারা তার গলায় ছুরি ধরলে লোকটি তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তারা ভিকটিমের বুকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে ভিকটিমের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে আরিফ আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে ও তার সহযোগীদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পলাতক অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *