মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে গ্রিড উপকেন্দ্রের কাজ চলছে

মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে গ্রিড উপকেন্দ্রের কাজ চলছে

জেলা

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
ইতিমধ্যে বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্র স্থাপনের জন্য মাটি ভরাটের কাজ চলছে। গত বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার সদর উপজেলার রায়শ্রীতে বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্র স্থাপনের জন্য মাটি ভরাটের কাজ চলছে দেখা যায়।
হালকা ঝড়-বৃষ্টি হলেই মৌলভীবাজার শহরে বিদ্যুৎবিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। কারণ হিসেবে শ্রীমঙ্গল ও ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে দীর্ঘ সরবরাহ লাইনের মাধ্যমে জেলা শহরে বিদ্যুৎ আসে। এ দুর্ভোগ থেকে মৌলভীবাজার শহরবাসীকে মুক্তি দিতে ‘গ্রিড উপকেন্দ্র’ স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার রায়শ্রীতে গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। স্থানটিতে চলছে মাটি ভরাটের কাজ। এ কাজ শেষ হলেই গ্রিড উপকেন্দ্র স্থাপনের কারিগরি কাজ শুরু হওয়ার কথা। এরই মধ্যে মাটি ভরাটের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রায়শ্রীতে গ্রিড উপকেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত স্থান ঘুরে দেখা গেছে, মনু নদ থেকে পাইপের মাধ্যমে সরাসরি স্থানটিতে বালু এনে ফেলা হয়েছে। নির্ধারিত স্থানটির দক্ষিণ দিকের বেশির ভাগ ভরাট হয়ে গেছে। উত্তর দিক এখনো অনেকটা নিচু আছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) গ্রিড উপকেন্দ্রের স্থানে মাটি ভরাটের কাজ করছে।
পিজিসিবির উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এস এন এ বাছিত গত রোববারে জানান, ‘আমি পাঁচ-ছয় মাস ধরে মাঠপর্যায়ের কাজ তদারকি করছি। গ্রিড সাবস্টেশনের জন্য মাটি ভরাটের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত মাটি ভরাটের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ হয়েছে। এখানে সাবস্টেশন হলে বর্তমানে যে লোডশেডিং হচ্ছে, তা অনেকটাই কমে আসবে। এখন শ্রীমঙ্গল-ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কাভার হচ্ছে। তখন এই রায়শ্রী থেকে কাভার হবে।’
বিউবো মৌলভীবাজার ও স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, মৌলভীবাজার শহর ও সংলগ্ন এলাকায় বিউবোর গ্রাহক প্রায় ৩০ হাজার। বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১৪ মেগাওয়াট। মৌলভীবাজার শহরে বিদ্যুৎ আসে ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল লাইন ও ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ লাইনের মাধ্যমে। ঝড় হলে গাছ উপড়ে এতে দীর্ঘ সময় মৌলভীবাজার শহর ও শহরতলীর এলাকা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন থাকে।
বিউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবিবুল বাহার সম্প্রতি (৩রা এপ্রিল) বলেছেন, গ্রিড সাবস্টেশন হলে সমস্যার প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ সমাধান হয়ে যাবে। গ্রিড সাবস্টেশন যত দ্রুত করা যায়, ততই মঙ্গল শহরবাসীর।
গ্রিড উপকেন্দ্র স্থাপনে দায়িত্বে থাকা পিজিসিবি সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ‘মৌলভীবাজার ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র’ নির্মাণের জন্য রায়শ্রীতে পাঁচ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধানে পিজিসিবি এ কাজের তদারকি করছে। কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্ট্রেংথেনিং প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ ও চীন সরকার যৌথ উদ্যোগে।
পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্ট্রেংথেনিং প্রকল্পের (জিটুজি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী চিরঞ্জীব দেওয়ানজী গত রোববারে জানান, রায়শ্রীতে মাটি ভরাট হচ্ছে। মাটি ভরাট শেষ হলেই উপকেন্দ্রের অন্যান্য কাজ শুরু হয়ে যাবে। মন্ত্রণালয় থেকে নকশার অনুমোদন ও মাটি ভরাটের কাজ শেষ হলেই শীগ্রই কাজ শুরু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *