নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মহাদেবপুরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মহাদেবপুর প্রেসক্লাবের সংগঠনিক সম্পাদক সুইট হোসেনের উপর হামলা ও মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। চকরাজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হায়দার আলী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। রোববার দুপুরে উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের চকরাজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এঘটনা ঘটে। এঘটনায় রোববার রাতে মহাদেবপুর থানায় মামলা দায়েরে করার পর রাতেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। মূলহোতা শিক্ষক মোঃ হায়দার আলী পলাতক।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার চকরাজা গ্রামের মৃত কষ্টার ছেলে মোঃ আব্দুস সাত্তার (৪৬), মোঃ অহির উদ্দিনের ছেলে মোঃ রবিউল ইসলাম ও মোঃ ওয়াছের আলীর ছেলে মোঃ ইলিয়াস হোসেন (২৫) এবং এ মামলার অন্য আসামীরা হলো, সোনাপুর গ্রামের মৃত তাহের উদ্দিনের ছেলে চকরাজা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ হায়দার আলী, চকরাজা গ্রামের মোঃ খোকার ছেলে আজাদুল ইসলাম, মোঃ আব্দুর রহমানের ছেলে মোঃ রাসেল আহম্মেদ, মৃত কাজিমুদ্দিনের ছেলে মোঃ ওয়াছের আলী ও মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ শহিদুল ইসলামসহ আরো অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ‘রোববার দুপুর ২ টার দিকে ভীমপুর ইউপির চকরাজা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানব বন্ধনের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তারা আতর্কিত ভাবে দলবদ্ধ হাতে বাঁশের লাঠি ও গাছের ডাল নিয়ে চকরাজা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় আসিয়া আমার সংবাদ সংগ্রহে বাধা প্রদান করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এসময় আমি তাদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করিলে ওয়াছের আলীর হুকুমে তারা আমাকে এলোপাথাড়ী ভাবে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা জখম করে। তাদের মারপিটের কারণে আমি মাটিতে পড়ে গেলে আব্দুস সাত্তার আমার পরিহিত জিন্স প্যান্টের ডান পার্শ্বের পিছনের পকেটে থাকা নগদ ১৭ হাজার ৪৭০ টাকা জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয়। এসময় হায়দার আলী আমার গলায় থাকা ১২ আনা ওজনের স্বর্নের চেইন জোর পূর্বক ছিনিয়ে নেয়। আমি কোনমতে ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টাকালে ইলিয়াস হোসেন আমার ঘাড়ে থাকা ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ক্যানন কোম্পানীর ডিএসেলার ৭০ ডি মডেলের ক্যামেরা জোর পূর্বক কেড়ে নেয় এবং মারপিটের সময় আমার কাছে থাকা ১০ হাজার টাকার একটি স্মার্ট ফোন ভেঙে যায় যায়।’
এবিষয়ে সাংবাদিক সুইট হোসেন বলেন, ‘চকরাজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষিকা ও অভিভাবকেরা বেলা ১১ টার দিকে মানববন্ধন করে। এ সংবাদ সংগ্রহ করতে ওই বিদ্যালয়ে যাই। এসময় প্রধান শিক্ষকের প্রতিপক্ষ শিক্ষক হায়দার আলীর নেতৃত্বে অন্যান্যরা আমার উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তারা আমাকে বেদম মারপিট করে ক্যামেরা, সোনার চেইন ও নগদ টাকা ছিনতাই করে নেয়। আমি এদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।’
সত্যতা নিশ্চিত করে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিক সুইট হোসেনের উপর হামলা হওয়ার পর সে এসে রাতে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর রাতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আজ আদালতে পাঠানো হবে। শিক্ষকসহ এ মামলার অন্য আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।’
