মাধবপুরে বাঁশ ও বেতের কারিগররা অভাব-অনটনে চলে যাচ্ছে ভিন্ন পেশায়

মাধবপুরে বাঁশ ও বেতের কারিগররা অভাব-অনটনে চলে যাচ্ছে ভিন্ন পেশায়

জেলা

হীরেশ ভট্টাচার্য্য হিরো, মাধবপুর প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় প্লাস্টিক, মেলামাইন ও স্টিলের পণ্যের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী। ফলে এ পেশার সাথে জড়িত শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা আর্থিক অনটনের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে। এ পেশায় টিকতে না পারে ভিন্ন পেশায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। উপজেলার দুর্গাপুর, ছাতিয়াইন, উজ্জলপুর, শাহপুর, শ্যামপুর সহ আরো কয়েকটি এলাকায় বংশ পরস্পরায় বাঁশ ও বেত শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। পুঁজি স্বল্পতা, বাঁশ ও বেতের উৎপাদন হ্রাস, আর্থিক অস্বচ্ছলতা, উপকরণের মূল্য বৃদ্ধিতে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প এক সময় ব্যাপক প্রচলন ছিল বাশের তৈরি কুলা, ঝুড়ি, চাটাই, হাঁস মুরগির খাচা, ঘাড়ো, বেতের চেয়ার, ধামা, চালুনি, ঢুলি, কলাই, বুরং, হাতপাখা।
কালের বিবর্তনের প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে ছাতিয়াইন ইউনিয়নের উজ্জলপুর গ্রামের গোপাল মালাকার ও সুবল মালাকার জানান, এক সময় তাদের কাছে ১০/১২জন করে বাঁশ ও বেত শিল্পের কারিগর ছিল। তখনকার দিনে একজন কারিগরের বেতন ছিল প্রতিদিন ২০০/২৫০ টাকা। এখনকার দিনে সে কারিগরদের বেতন দিতে হয় ৪০০/৫০০ টাকা। তাও সিজনের সময় পাওয়া যায় না।

তারা আরো জানান, কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আগে একটি বাঁশের দাম ছিল ৫০/৬০ টাকা, সেখানে এখন প্রতিটি বাঁশ কিনতে ১৯০-২৪০ টাকায় আর নির্বিচারে বন জঙ্গল উজাড় হওয়ার ফলে বেত গাছ এখন খুব একটা চোখে পড়ে না। তাই এ শিল্পের সাথে জড়িত পরিবারগুলো আর্থিক অনটনের মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছে।

উপজেলার ছাতিয়াইন এলাকায় কার্তিক সরকার কয়েকবছর হল পৈত্রিক পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন দিন মজুরী করছেন। তিনি বলেন, বেত শিল্পে টাকা বিনিয়োগ করতে খুব একটা লাভ হতো না। এখন গতর খেটে কাজ করি, দিন বাদে ২-৩শত টাকা রোজগার হয়।

ক্ষুদ্র শিল্প ও কুঠির শিল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গরা আছেন সহজ শর্তে তাদের জন্য ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা হলে এই পেশার কারিগরদেরকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *