নিজস্ব প্রতিনিধি:
অতীতের তুলনায় এবার লবণ উৎপাদন ভালো হয়েছে। দামও ভালো অবস্থানে। কিন্তু দাম বাড়ার মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। ক্ষেতের লবণের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। তাদের কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রান্তিক লবণ চাষিরা। মিল মালিকদের অভিযোগ, মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় মাঠ থেকে চড়া দামে লবণ কিনতে হচ্ছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। প্রতি বছর জমির মালিকরা নিরলসভাবে জমির ইজারা বাড়ায় যার কারনে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। লবণ চাষের জমির জন্য সরকারের আলাদা ভূমি কর নির্ধারণ করা উচিত।
উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে ২২ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদিত হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় চার লাখ মেট্রিক টন বেশি। বিসিক কর্মকর্তারা জানান, বছরের ডিসেম্বর থেকে লবণ উৎপাদনের মৌসুম শুরু হয়। কক্সবাজার জেলা ও বাঁশখালী উপজেলার উপকূলে লবণের চাষ হয়। এবার লবণের বাম্পার ফলন হয়েছে। চাহিদা মেটাতে লবণ আমদানির প্রয়োজন নাও হতে পারে।
বাজারের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে মাঠে খরচ বাদে প্রতি মণ লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪২০ টাকায়। আর মিল গেটে অপরিশোধিত লবণ বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা (৭৪ কেজি) ১২০০ টাকায়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ মৌসুমে লবণের দাম ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে লবণ জমির খাজনাসহ উৎপাদন খরচ বাড়লেও প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না প্রান্তিক চাষিরা। এতে চাষিরা তেমন আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন না।
দালালরা লাভের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কারণ প্রান্তিক চাষিদের নিজস্ব জমি নেই। উৎপাদন খরচ মেটানোর মতো আর্থিক সামর্থ্যও তাদের নেই। মৌসুমের শুরুতে দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীরা ঋণ দিয়ে কৃষকদের জিম্মি করে রাখে। পরে উৎপাদিত লবণ তাদের কাছে বিক্রি করতে হয়। আবার মিল মালিকরা মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছ থেকে লবণ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ উৎপাদিত লবণের বেশির ভাগই যায় মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে।
এদিকে বিসিক সূত্রে জানা গেছে, মিলগুলোতে শোধনের সময় আয়োডিন কম ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, লোডশেডিংয়ের কারণে মিলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। মেশিন চালু রাখা যাচ্ছে না বলে আয়োডিন যোগ করতে সমস্যা হচ্ছে।
বিএসআইসি আগ্রাবাদ কার্যালয়ের লবণ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, “প্রতি মাসে প্রায় এক মেট্রিক টন আয়োডিনের চাহিদা থাকে। এখন আয়োডিনের ব্যবহার আগের চেয়ে বেশি পরিমানে হচ্ছে। আমরা মিল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করি।”