ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, বিব্রত পেশাদার সংবাদকর্মীরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য, বিব্রত পেশাদার সংবাদকর্মীরা

জেলা

মনিরুজ্জামান মনির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ও আশুগঞ্জে ফেসবুক পেইজ খুলে অবাধে চলছে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য। সংবাদ মাধ্যমের নামের সাথে সাদৃশ এসব ফেসবুক পেইজের কার্ড ঝুলিয়ে অনেক চিহ্নিত অপরাধীরা সাংবাদিকের বেশ ধারণ করছে। এই সব কার্ড ব্যবহার হচ্ছে মাদক বিক্রি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের হাতিয়ার হিসেবে।
সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে আশঙ্কাজনক হারে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্যের কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে পেশাদার সংবাদকর্মীদের। শুধু এতেই শেষ নয় এইসব কথিত ভূয়া সাংবাদিকরা সরকারী নিবন্ধন বিহীন অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং নাম নিশানাহীন বিভিন্ন প্রিন্ট পত্রিকার পরিচয়পত্র গলায় ও কোমরে ঝুলিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম, অপকর্ম, চাঁদাবাজি নির্দ্বিধায় করে যাচ্ছে। অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর।
সম্প্রতি আশুগঞ্জ বন্দরের অটো রাইছ মিল মালিকদের নিকট থেকে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ইমরান হোসেন ও জজ মিয়া নামে দুই ভুয়া সাংবাদিক গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে। নিজেদেরকে ‘সাফকথা’ নামক কথিত সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ওসমান গনি অটো রাইছ মিল ও এলিগেন্স অটো রাইছ মিল মালিকের নিকট পরিবেশ দুষণের অযুহাতে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল তারা। এ সময় তারা নিজেদেরকে সাফকথা নামক ফেসবুক পেইজ ছাড়া কোন অনুমোদিত সংবাদ মাধ্যমের কর্মী বলে পরিচয় দিতে পারেনি। ফলে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা তাদেরকে গণধোলাই দিয়ে আটকিয়ে রাখে। পরে তাদেরকে পুলিশে দিতে চাইলে স্থানীয় মুরুব্বিদের মধ্যস্থতায় ক্ষমা চেয়ে এবং মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।
মিল মালিকরা জানায়, ছাড়া পাবার পর আবারও বিভিন্ন নাম সর্বস্ব মিডিয়ার একাধিক কার্ড গলায় ঝুলিয়ে তারা ব্যবসায়ীদের বিরক্ত করছে। সাফকথা নাম মিডিয়ার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এমরান হোসেন, মাহবুব আলম, মঞ্জুর মোরশেদ, জজ মিয়া নামক ব্যক্তিরা নানাভাবে হুমকি দিয়ে চলছে।
এ ব্যাপারে ওসমান গনি অটো রাইছ মিলের স্বত্বাধিকারী বাহাউদ্দিন, এলিগেন্স অটো রাইছ মিলের স্বত্বাধিকারী হাজী মোঃ ফারুক ও ম্যানেজার আরিফ বাদী হয়ে ভুয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় পৃথক তিনটি অভিযোগ করেছেন বলে মিল মালিকরা জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু রাইছ মিলেই নয়, ব্ল্যাকমেইলিংয়ের সঙ্গে জড়িতরা সর্বত্র সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে এবং নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে, পাশাপাশি গুজব ও অপপ্রচার বাড়ছে। এবং প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকদের উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নষ্ট হচ্ছে, পাশাপাশি অনাস্থা তৈরি হচ্ছে।
এই বিষয়ে আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাচ্চু বলেন, শুধুমাত্র ফেসবুক পেইজ খুলে সাংবাদিক পরিচয় দেয়া পেশাদার সাংবাদিকদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আজাদ রহমান বলেন, সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যবসায়ীদের নিকট চাঁদা দাবির অভিযোগটি আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *