নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাণিজ্যের আড়ালে প্রতি মাসে দেড় হাজার কোটি ডলার পাচার হতো। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এই সংখ্যা স্থানীয় মুদ্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকির পর তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বড় শিল্প গ্রুপগুলো ওভার অ্যান্ড আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে এই অর্থ পাচার করতো।
সোমবার ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) আয়োজিত ‘ব্যাংকিং সেক্টর আউটলুক-২০২৩’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এবিবির এমন তথ্যের সঙ্গে একমত বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একটি সূত্র জানায়, পণ্যের দাম কম বা বেশি দেখিয়ে অর্থ পাচারের প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে বিপুল এসলিকে আটক করা হয়েছে। প্রতি মাসে অর্থ পাচারের পরিমাণ প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। কঠোর নজরদারির মাধ্যমে এটি অনেকাংশে কমে গেছে। কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমদানি করা পণ্যের দাম ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি দেখিয়ে অর্থ পাচার করা হচ্ছে। তাই বড় অঙ্কের এলসি চেক করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এবিবির মতে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর একার পক্ষে দেশের ঋণ খেলাপি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এটি নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় ব্যাংকারদের কিছু করার থাকে না। উদাহরণস্বরূপ, কিছু শক্তিশালী বড় শিল্প গ্রুপ ঋণ খেলাপি ক্ষেত্রে উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ পায়। কিন্তু দীর্ঘদিন আইনি জটিলতায় সেই টাকা সংগ্রহ করতে পারেনি ব্যাংকটি। একইভাবে খেলাপির নামও প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ব্যাংক কোম্পানি আইন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের অভাবও এখানে বড় বাধা। তাই দেশের স্বার্থে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
এবিবি জানায়, অনেক বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। তাদের সহিংসতা কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতিমালা সংশোধনের মাধ্যমে আমদানিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ফলে প্রতি মাসে দেড় হাজার কোটি ডলারের অবৈধ লেনদেন বন্ধ হয়েছে।
দেশের কয়েক ডজন ব্যাংক একটি শিল্পগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। আরও কয়েকটি ব্যাংক ব্যবসায়ীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সেগুলো ব্যাংকিং ব্যবসাও ভালো করতে পারছে না।