মোহাম্মদ হাসান , কক্সবাজার প্রতিনিধি:
পবিত্র শব-ই-বরাত, সাপ্তাহিক ছুটি মিলে টানা পাঁচ দিনের লম্বা বিরতিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ও পার্শ্ববর্তী পর্যটন স্পট ভরে গেছে পর্যটকে । এক কথায় ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ পর্যটক এখন কক্সবাজারে। বিপুলসংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতিতে পুরো কক্সবাজার এখন পর্যটকের দখলে। এভাবে রোজার আগে হয়তো আর ছুটি মিলবেনা তাই এত লোকের সমাগম লক্ষ্য করা যায়।
৭ মার্চ মঙ্গলবার ছিল পবিত্র শব-ই-বরাত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ টানা তিন দিন।এর মধ্যে যোগ হয়েছে শুক্র-শনিবারের ছুটি। তবে মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার বার অফিস আদালত খোলা থাকলে ও ছিল ঢিলেঢালা ভাব।তাই ব্যবসায়ী চাকুরীজীবী, শিক্ষক সবাই ছুটে এসেছেন কক্সবাজারে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ,সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ কেউ ৯ মার্চ বৃহস্পতিবার অফিস আদালত খোলা থাকলেও ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন। কারণ ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে অনেকে ছুটে আসেন কক্সবাজার। এবার স্বাধীনতা দিবস পড়ে গেছে রমজানে তাই সিয়াম সাধনার এ সময় মানুষ খুব বেশী ভ্রমণ করেন না।হয়তো সেই কারণে এ সুযোগকে কাজে লাগাতে ভ্রমণেচ্ছু মানুষেরা এখানে ভিড় করেছে। তাদের অনেকেই আগাম বুকিং নিয়েছেন হোটেল, মোটেল ও কটেজগুলোয়। ব্যয়বহুল জেনেও অনেকে আগাম টিকিট কেটেছেন। সেন্ট মার্টিনেও এবার আগাম কিছু বুকিং পেয়েছেন সেখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা।
বুধবার বিকালে কক্সবাজার কলাতলী শহরের সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঢাকা থেকে আগত শতাধিক পর্যটক। সকাল থেকে হোটেল-মোটেলে চেষ্টা করেও তারা রুম পাননি। নুরআলী ও আবদুল মান্নান নামের দুই পর্যটক বলেন, ‘আমরা ঢাকার সাভারের প্রায় ৪০ জনের একটি গ্রুপ বাস ভাড়া নিয়ে কক্সবাজার এসেছি। আসার সময়ও রাস্তায় দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়েছি। আবার এখানে এসে দেখি কোনো হোটেলে রুম নেই।’ বরিশাল থেকে আসা কলিম সরওয়ার রানা বলেন, ‘সকালে বাস থেকে কক্সবাজার কলাতলী ডলফিন মোড়ে নেমেছি। এরপর কলাতলী নামক একটি রেস্তোরাঁয় সকালের নাশতা করতে গিয়ে দেখি সেখানেও পা রাখার জায়গা নেই। পরে পাশের একটি রেস্তোরাঁয় ব্রেকফাস্ট করেছি। এরপর রুম খুঁজতে যে হোটেলেই যাই সবার একটি কথা-রুম খালি নেই।’
শেষমেষ টমটম চালকের সহায়তায় কলাতলীর ভেতরে আমারী রিসোর্টে পেয়ে গেলাম রুম। তবে ভাড়া একটু বেশী তবুও রুম পেয়ে আমরা খুশী।
সেন্ট মার্টিনেও পর্যটকদের ভিড় রয়েছে বলে জানা যায়। পরের দিন যাব সেন্টমার্টিন সেখানে রুমের ক্রাইসিস। তারপর কর্ণফুলী জাহাজের পরিচালক আমাদের যাতায়াতের টিকেটের ব্যবস্থা করে দিলেন, আর সেন্টমার্টিনে একটি রিসোর্ট বুকিং করে দিলেন।তিনি হোটেল ও জাহাজে আমাদের ২০ শতাংশ হারে ডিসকাউন্ট ও দিলেন।খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, কয়েকদিন ধরেই দ্বীপে পর্যটক বেড়েছে।
এ দিকে সাতক্ষীরা থেকে এসেছেন শিক্ষা সফরে অধ্যাপক আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে ৩৫ জনের একটি দল রুম না পেয়ে ঘুরতে ঘুরতে চলে আসে অভিজাত হোটেল সী প্যালেসে।
হোটেল সী প্যালেসের ম্যনেজার আশরাফ জামান বলেন, ‘আমার হোটেলে ৫০টি রুম আছে। সব এক সপ্তাহ আগেই বুকিং হয়ে গেছে। অনেক পর্যটক রুমের জন্য আসছেন। অনেককে না করতে হয়েছে।’তিনি তাদের কে পার্শ্বের হোটেল ইউনি রিসোর্টে রুমের ব্যবস্থা করে দেন।
কক্সবাজার কলাতলী হোটেল মোটেল জোনের সভাপতি মুকিমখাঁন বলেন,শেষ মৌসুমে প্রচুর পর্যটক পেয়ে তারা খুবই আনন্দিত।পর্যটকদের কোথাও কোন অসুবিধা হলে হেল্পডেক্সে এসে জানানোর সাথে সাথে প্রশাসন ও হোটেল কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিক্তিতে তা ব্যবস্থা গ্রহন করতে সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারী ও রয়েছে সব পর্যটন স্পটে।
