নিজস্ব প্রতিনিধি:
অনেকেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগেন। আর এই সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ হল অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার। আমরা ভাজা, তৈলাক্ত খাবার পছন্দ করি। এসব খাবারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে কারণ এগুলো সুস্বাদু হলেও স্বাস্থ্যকর নয়। ভাজা, তৈলাক্ত খাবারে ব্যবহৃত তেল বারবার ব্যবহারে পুড়ে যায় এবং ট্রান্স ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়। ট্রান্স ফ্যাট হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের প্রধান কারণ।
তৈলাক্ত খাবার খাওয়া কোনোভাবেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। লক্ষ্য করবেন যে ডুবো তেলে ভাজা ও অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার খাওয়া হলে অস্বস্তিবোধ কাজ করে। তৈলাক্ত খাবার একদিকে যেমন পেটের সমস্যা সৃষ্টি করে, অন্যদিকে মেদ বাড়াতেও ভূমিকা রাখে। তাই তৈলাক্ত খাবার সবসময় এড়িয়ে চলতে হবে। তারপরও তৈলাক্ত খাবার কোনো না কোনো সময় খাওয়া হয়। যদি ঝাল, মশলা বা তেলজাতীয় খাবার খেলে পেট জ্বলে বা ব্যথা হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন।
সাধারণত, পরিবারের বাইরে থাকা শিক্ষার্থী বা ব্যাচেলর কর্মচারীরা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। যদি গ্যাস্ট্রিককে গুরুত্ব সহকারে না নেওয়া হয়, তবে এটি বাড়তে পারে এবং আলসারের দিকে পরিচালিত করে। বিভিন্ন হোটেল ও ক্যান্টিনের খাবারে তেল ও মশলা বেশি থাকে যা পেটে জ্বালাপোড়া করে। সাধারণ খাবারের পাশাপাশি তেহারি, চিকেন পোলাও, বিরিয়ানির মতো খাবার নিয়মিত খেলে সমস্যা বাড়বে। রাস্তার পাশে বিভিন্ন ভাজা-ভাজা খাবারও এড়িয়ে চলতে হবে। এসব খাবার অ্যাসিড রিফ্লাক্স সৃষ্টি করে। অর্থাৎ পাকস্থলীর অ্যাসিড গলায় চলে যায়। তাই খালি পেটে বেগুনি, আলুর চপ বা বেশি ঝাল দিয়ে ফুচকা-বেলপুরি খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করতে হবে। এমন খাবার খাওয়ার পর কী করবেন তা জানেন না।
হালকা গরম হলুদ পানি পান করুন-
তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার পর হালকা গরম হলুদ পানি পান করলে তা পাকস্থলীর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়া গরম পানি পান করলে খাওয়া খাবার ভালোভাবে হজম হয় এবং তৈলাক্ত খাবার থেকে পেটের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
ডিটক্স ওয়াটার পান করুন-
ডিটক্স ওয়াটার পান করলে শরীর থেকে টক্সিন এবং ক্ষতিকারক পদার্থ বের হয়ে যায়। কিছু পরীক্ষায় দেখা যায় যে তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার পর ডিটক্স ওয়াটার পান করলে শরীরে খাবারের নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধ করা যায়। ডিটক্স ওয়াটার সাধারণত প্রস্তুত হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি করতে চাইলে পানি, লেবুর রস ও শসার রস একসঙ্গে মিশিয়ে পান করতে হবে।
খাওয়ার পর হাঁটুন-
শুধু তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার পরেই নয়, প্রতিটি খাবারের পর অন্তত ১০০ কদম হাঁটতে হবে। এতে করে খাবার ভালোভাবে হজম হয় এবং খাবারের চর্বি শরীরে জমতে পারে না। যেহেতু তৈলাক্ত খাবার থেকে অতিরিক্ত চর্বি তলপেটে সহজেই জমা হয়, তাই এই জাতীয় খাবার খাওয়ার পর আপনার কমপক্ষে ২০ মিনিট ধীরে হাঁটা উচিত।
শসা খেতে হবে-
শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে শসাকে সবচেয়ে উপকারী সবজি বলা হয়। তাই ওজন কমানোর জন্য খাদ্যতালিকায় শসাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা পর লবণ ছাড়া দুটি বড় শসা খেতে হবে।
সাইট্রাস ফল খেতে হবে-
লেবু, কমলা, জাম্বুরা এবং জাম্বুরা হল সাইট্রাস ফল। টক জাতীয় ফল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-সি পাওয়া যায়। এছাড়া এসব ফলের মধ্যে উপস্থিত অ্যাসিড তেল ও চর্বির নেতিবাচক প্রভাব কমাতেও কার্যকর। যেকোনো ফল আস্ত বা অন্য ফলের সঙ্গে মিশিয়ে ফ্রুট সালাদ হিসেবে তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার পর উপকার পাওয়া যায়।