তিস্তা পাড়ের মানুষের রাতের ঘুম হারাম, উজানের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

তিস্তা পাড়ের মানুষের রাতের ঘুম হারাম, উজানের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

জেলা

রুবেল হোসাইন, রংপুর প্রতিনিধি:
উজানের পাহাড়ি ঢল বেয়ে আসা পানিতে আবারও বাড়তে শুরু করেছে তিস্তার পানি। এতে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে তিস্তা পাড়বর্তী রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী তীরবর্তী কয়েকটি নিম্নাঞ্চল। পানির প্রবল চাপের কারণে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তিস্তা কুলবর্তী মানুষের আশঙ্কা এবার হতে পারে বড় ধরনের বন্যা।

দেশের বৃহত্তর সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যাহা এবছর রেকর্ড। কয়েকদিন অব্যাহত বৃষ্টি এবং উজানের পাহাড়ি ঢলে (স্বাভাবিক ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর গংগাচড়া উপজেলার লক্ষিপুর ইউনিয়ন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

গংগাচড়া উপজেলার বাসিন্দা আকমল হোসেন জানান , নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ বন্দি হয়ে পড়ে। তিস্তা পাড়ে দুদিন থেকে পানি বাড়ছে। পানি বাড়লেই পুরো এলাকা বন্যায় ডুবতে থাকে। কয়েকদিন নদী শান্ত ছিল। এখন হু হু করে তিস্তায় পানি বাড়ছে। ত্রাণ নয়, নদী খনন করে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা উচিত। এবার নিশ্চিত বন্যা হতে পারে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা প্রতিবেদককে বলেন, জুন-জুলাই মাসজুড়ে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে ছিল। কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি কম থাকলেও ৯ আগষ্ট বুধবার দিবাগত রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার এবং ১১ আগস্ট শুক্রবার সকালে নদীর পানি-৭সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় ওই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে। দুপুরের দিকে পানি কমে যেতে পারে।

রংপুর জেলা প্রশাসক-মোহাম্মাদঃ মোবাশ্বের হাসান বাংলাদেশ কন্ঠকে জানান, তিস্তা সংলগ্ন বাসিন্দাদের সর্বাক্ষণিক খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *