জাবিতে বিতর্কিত উপাচার্যকে ইমেরিটাস অধ্যাপক বানানোর চেষ্টা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জাবিতে বিতর্কিত উপাচার্যকে ইমেরিটাস অধ্যাপক বানানোর চেষ্টা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শিক্ষা

জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন করে পদত্যাগকারী উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবীরকে ইমেরিটাস অধ্যাপক বানানোর অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকাল সাড়ে তিনটায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বরে জমা হয়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর ও কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে নতুন রেজিস্ট্রার ভবনে এসে শেষ হয়। এসময় সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি সম্পন্ন হয়।

আন্দোলনকারীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুসারে একাডেমিক কাউন্সিল থেকে ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগের নীতিমালা সুপারিশ করতে হয়। যা সিন্ডিকেট চূড়ান্ত করার এখতিয়ার রাখে। একইসাথে কোন শিক্ষককে ইমেরিটাস অধ্যাপক বানাতে হলে একাডেমিক কাউন্সিলে প্রস্তাব করতে হবে। কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগ দিবে সিন্ডিকেট। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চুপিসারে পদত্যাগকারী উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবীরকে ইমেরিটাস বানাতে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন। ইতোমধ্যে একাডেমিক কাউন্সিল অবগত না করেই সিন্ডিকেটে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ এর প্রথম স্ট্যাটিউটের ৩(ক)ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা সংক্রান্ত সকল পদের বিপরীতে একাডেমিক কাউন্সিল সিন্ডিকেটে সুপারিশ করবে।’

বিক্ষোভ মিছিলের সময় শিক্ষার্থীরা ‘খুনীদের আশ্রয়দাতা ইমেরিটাস হতে পারে না’, ‘খুনীদের আশ্রয়দাতা, দুর্নীতিবাজ ও নিপীড়কদের ক্যাম্পাসে ঠায় নাই’, ‘যৌন নিপীড়ক জনির দায়মুক্তির অপচেষ্টা চলবে না’, ‘জনি আর এনামুল একই বৃন্তে দুটি ফুল’ স্লোগান ধরেন। একইসাথে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের দায়ে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনিকে দায়মুক্তি দেওয়ার অপচেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের একাংশ।

বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী, মামলাকারী, পিএসসিতে নিয়োগ বোর্ডে থাকাকালীন অনিয়মে অভিযুক্ত অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির এমিরেটাস অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা হবে। এরকম বিতর্কিত ব্যক্তিদের আমরা পুনর্বার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পদে আসীন দেখতে চাই না। এমনকি তার সময় জুবায়ের হত্যাকান্ড ঘটেছিল। জুবায়ের হত্যাকান্ডে জড়িত ছাত্রলীগের খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন অধ্যাপক শরীফ। পাশাপাশি নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠে অধ্যাপক শরীফের বিরুদ্ধে। এসময় তিনি ছাত্র ও শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। তবে বর্তমান প্রশাসন শরীফ এনামুল কবিরকে ইমেরিটাস অধ্যাপক পদে বসানোর নজির তৈরি করতে যাচ্ছে, প্রশাসনের এমন কর্মকান্ডে ধিক্কার জানাচ্ছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *