ডেস্ক রিপোর্ট ঃ
জাপানে জন্ম নেওয়া দুই শিশুর হেফাজতের আইনি লড়াই শেষ। শিশুটি বাবা বা মা উভয়ের হেফাজতে থাকবে কিনা সে বিষয়ে রায়ের জন্য ২৯ জানুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।
রোববার (২২ জানুয়ারি) ঢাকার আদালতে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়, দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান। এরপর বিচারক এ মামলায় সাজার জন্য ২৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। জাপানি মা নাকানো এরিকোর আইনজীবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জাপানি মা নাকানো এরিকোর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনি আদালতকে বলেন, বড় মেয়ের বয়স ১৩ বছর, মধ্য মেয়ের বয়স ১১ বছর এবং ছোট মেয়ের বয়স ৯ বছর। ঢাকায় আনা দুই মেয়ের বয়স ১৮ বছর হতে এখনও ৫-৭ বছর বাকি। টোকিওতে বিশ্বের সেরা স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তারা তাদের মায়ের সাথে ভাল থাকবে। ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে পারেন। মেয়েরাও তাদের মায়ের কাছাকাছি থাকতে চায়। এ ছাড়া বাবাকে মেয়েদের খরচ দেওয়ার কথা বলা হলেও তিনি হাইকোর্টের আদেশ মানেননি।
অন্যদিকে জাপানি বাবার আইনজীবী ইমরান শরীফ বলেন, বাদী-আসামিদের বিয়ে মুসলিম শরিয়ত অনুযায়ী হয়েছে। এতে শিমুদের জিম্মার দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, মেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তাদের মায়ের সাথে থাকে। নাবালক হওয়ার পর বাবার হেফাজতে থাকতে পারে। তবে আইনে মায়ের হেফাজত হারানোর বিষয়ে আরও বলা হয়েছে, যদি কোনও মা বিবাহিত অবস্থায় আবাসিক ভবনের বাইরে থাকেন তবে মা সন্তানদের হেফাজত হারাবেন। কারণ ভরণপোষণের জন্য পিতার প্রয়োজন।
এর আগে, গত ১৫ জানুয়ারি দুই জাপানি শিশু ও তাদের অভিভাবকের জবানবন্দি শুনেন পারিবারিক আদালত। একইসঙ্গে বাবা ও মায়ের জবানবন্দিও শোনেন আদালত।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশী প্রকৌশলী ইমরান শরীফ ২০০৮ সালে জাপানি ডাক্তার এরিকো নাকানোকে বিয়ে করেন। বৈবাহিক কলহের কারণে এরিকো ২০২০ সালের প্রথম দিকে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। বিয়ের ১২ বছরে তারা তিনটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। তারা হলেন জেসমিন মালেকা, লায়লা লীনা ও সানিয়া হেনা। এরপর ইমরান তার দুই বড় মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন যারা স্কুলে যাচ্ছিল। কনিষ্ঠ কন্যা জাপানে এরিকোর সাথে থেকে যান।
এরপর করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ওই দুই মেয়ের দেখাশোনা করতে গত বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী। হাইকোর্টে নিষেধাজ্ঞার জন্য আবেদন করলে বিচারক তাদের আপস করতে বলেন। কিন্তু দম্পতি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় কয়েক মাস শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়াও, বাবাকে খরচ দিতে বলা হয় যাতে মা বাচ্চাদের দেখতে পারেন।