কফি খাওয়ার উপকারিতা থাকলেও অপকারিতায় রয়েছে ত্বকের ক্ষতি!

কফি খাওয়ার উপকারিতা থাকলেও অপকারিতায় রয়েছে ত্বকের ক্ষতি!

লাইফস্টাইল

নিজস্ব প্রতিনিধি:
শহুরে জীবনে পানীয় হিসেবে কফি বেশ জনপ্রিয়। কফি যেমন শরীরকে শক্তিশালী করে। এর বিপরীত ফলাফলও রয়েছে। কফিতে ক্যাফেইন থাকে। ফিমেলফার্স্ট ডটকো ডটইউকের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, স্বাস্থ্য নির্দেশিকা অনুসারে শরীরে খুব বেশি হলে দৈনিক ৪০০ মি.গ্রাম ক্যাফেইন নেওয়া যেতে পারে। তবে কফি ছাড়াও চা, চকলেট এবং রঙিন কোমল পানীয়তেও ক্যাফেইন থাকে। এই সব জিনিস সারা দিন কফি ছাড়া খাওয়া হয়ে থাকে। তাই সব মিলিয়ে দেখা যায় অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরে বিভিন্নভাবে প্রবেশ করছেই।

কফির অনেক উপকারিতা আছে, এটা সত্যি। স্বাদ, সুগন্ধ ও উপকারিতার কারণে এটি সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। কফি পান করলে শরীরে শক্তি আসে, কাজের প্রতি স্পৃহা বাড়ে। তাই অনেকেই কর্মস্থলে বসে ঘুম পেলে কফি পান করেন। উপকারিতা যাই হোক না কেন, কোনো খাবারই একবারে বেশি খাওয়া ভালো নয়। কফিও এর ব্যতিক্রম নয়।

বর্ষাকালে উষ্ণতা বজায় রাখতে ক্রমাগত কফিতে চুমুক দিয়ে থাকেন। একঘেয়ে কাজ করতে গিয়ে ক্লান্তি দূর করতে অনেকেই বারবার কফিতে চুমুক দেন। চাঙ্গা হওয়ার জন্য কফির কোনো বিকল্প নেই। তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সবচেয়ে প্রথম প্রভাব পড়ে ত্বকে।

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্কয়ের ত্বক বিশেষজ্ঞ ও ‘ডা. ডেনিস গ্রস স্কিনকেয়ারয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডেনিস গ্রস বলেন, দৈনিক এক কাপ (১২ আউন্স) কফি পান ত্বকে কোনো ক্ষতি করে না। তবে অতিরিক্ত কফি পান নেতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। ত্বকের ক্ষতি হতে পারে ভেবে হঠাৎ যদি কফি খাওয়া বন্ধ করে দেন, তা হলে ত্বকে কি প্রভাব পড়তে পারে চলুন তা জেনে নেওয়া যাক:

পানির ঘাটতি কমায়-
ডঃ গ্রসের মতে, ক্যাফেইন মূত্রবর্ধক। এ কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। আর শরীরে পানি খালি থাকলে ত্বক হয়ে যায় প্রাণহীন ও মলিন। নিউইয়র্কের পুষ্টিবিদ মেলিসা রিফকিনের মতে, ক্যাফেইন খাওয়া মানে সারাদিন শরীরকে ডিহাইড্রেট করা। তাই এই ঘাটতি কমাতে পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত।

ব্রণের সমস্যা কমায়-
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত কফি পান করলে ব্রণের সমস্যা বাড়তে পারে। ব্রণ প্রধানত হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়, যা অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে হয়। এ কারণেই চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা তৈলাক্ত, চিনিযুক্ত, মশলাদার এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন যা শরীরে তাপ বাড়ায় এবং ব্রণ সৃষ্টি করে। কফিতে দুধ, ক্যাফেইনযুক্ত কফি, চিনি এবং মাখনের মিশ্রণ থাকে যা শরীরে তাপ তৈরি করে। এর ফলে ব্রণ হতে পারে। অনেকেই বলেছেন, কফি খাওয়া কম করলে মুখে ব্রণের সমস্যা কমে যায়।

ত্বক শুষ্ক হয় না-
অতিরিক্ত কফি পান করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। ফলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এই অভ্যাস বদলাতে পারলে প্রাকৃতিকভাবে শুষ্ক ত্বক হওয়ার আশঙ্কা নেই।

চোখের নিচের কালো দাগ কমে-
ড. গ্রস-এর মতে, অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করটিসল এবং অ্যাড্রেনালিন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে মানসিক চাপ বাড়ায়। এমনকি যদি ক্যাফেইন অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ না করা হয়, তবে এটি যে মানসিক পরিবর্তন ঘটায় তা শারীরিক ক্লান্তির মতোই প্রভাব ফেলতে পারে। শরীর গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এবং ত্বকে রক্ত প্রবাহকে বাধা দেয়। যা ফোলাভাব, মলিনতা, চোখের চারপাশে কালো দাগ এবং এমনকি তৈলাক্ত ত্বকের কারণ হয়। কফিতে ক্যাফেইন থাকে। তাই কফি পান করলে অনিদ্রার সমস্যা বাড়ে। কম ঘুমালে চোখের নিচে কালো দাগ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কফি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ঘুমের ঘাটতি হ্রাস পায়-
দুপুরের পর ক্যাফেইন খাওয়া ঘুমের চক্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ভোর ৪টার পর ক্যাফেইন সেবন করলে ঘুম এক ঘণ্টার বেশি বিলম্বিত হতে পারে। এর ফলে অনিদ্রা হয়, নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের সমস্যা। যা স্ট্রেস বৃদ্ধি, স্নায়বিক কার্যকারিতা হ্রাস, চোখের চারপাশে কালো দাগ এবং ফোলাভাব বাড়ে। কিন্তু কফি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *