ওষুধ ছাড়াই সুস্থ হতে পারেন ‘আকুপাংচার’ নামে এক বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতিতে
নিজস্ব প্রতিনিধি:
আকুপাংচার চিকিৎসার একটি বিশেষ পদ্ধতি যা প্রায় ৫,০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে। আকুপাংচার শব্দটি এসেছে দুটি শব্দ“Acus” ও “Puncture” থেকে।Acus মানে সুই আর Puncture মানে ফোটানো। তাই আকুপাংচার শব্দের অর্থ হলসুচ ফুটানো। আকুপাংচার ১৯৭৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দ্বারা স্বীকৃত হয়েছিল। WHO-এর মতে, আকুপাংচার ১০৩টি শারীরিক সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। অন্যান্য প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি যখন কিছু রোগ নিরাময়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়, তখন আকুপাংচারের ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে, এই চিকিৎসা বিশ্বের ১২০ দেশে ব্যবহৃত হয়।
যেসব রোগে আকুপাংচার কার্যকর:
-অনিদ্রা (insomnia)
-অতিরিক্ত উদ্বেগ (stress)
– স্বাভাবিক মাথাব্যথা
– মাইগ্রেনের ব্যথা
– ক্রনিক ডিপ্রেশন
– কোমর ব্যাথা
-সার্ভিকাল এবং লাম্বার ডিস্ক প্রোল্যাপস(Cervical and lumber disk prolapse)
– ফ্রোজেন সোল্ডার
-সায়াটিকা (sciatica)
– বাতের ব্যাথা (Arthritis)
– স্পোর্টস ইনজুরি (Argonomy)
– অটিজম, সেরিব্রাল পলসি, ডাউন সিনড্রোম
-অ্যাজমা, সাইনোসাইটিস
– শুকনো কাশি
-হার্টের ব্যথা
-স্ট্রোকের কারণে পক্ষাঘাত
-ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া
– ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি
-পলিনিউরাইটিস, পলিনিউরোপ্যাথি
– ফেসিয়াল পালসি (মুখ বাকা)
– হাত কাপা
-খিঁচুনি (seizure)
-ঘাড় শক্ত হওয়া
-পুরুষদের মধ্যে যৌন সমস্যা
– স্ত্রীদের বন্ধাত্ব
-বিভিন্ন স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত (মাসিক) রোগ
-দীর্ঘমেয়াদী পেটের সমস্যা
– আইবিএস (irritable bowel syndrome)
-বদহজম
-দীর্ঘমেয়াদী ঘন ঘন মলত্যাগ
আকুপাংচার একজন ব্যক্তির শরীরের ৯০ শতাংশ নিরাময় করে। যাদের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা আছে তারা প্রায়ই আকুপাংচার থেরাপি পছন্দ করেন। আকুপাংচার দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা ঠিক করতে জাদুর মতো কাজ করে।
এটি কীভাবে চিকিৎসা করা হয়: আকুপাংচার বিজ্ঞান অনুসারে, মানবদেহে অসংখ্য চ্যানেল বা মেরিডিয়ান রয়েছে যেখানে আকুপাংচার পয়েন্টগুলি অবস্থিত। এই চ্যানেল দিয়ে জৈবিক শক্তি প্রবাহিত হয়। চীনা ভাষায় এই শক্তিকে ‘চি’ (ছর) বলা হয়। সুস্থ থাকার জন্য এই ‘চি’-এর ভারসাম্য জরুরি। কোনো কারণে ‘চি’ প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে বা ভারসাম্যহীন হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। চিকিৎসার সময়, নির্দিষ্ট বাধাযুক্ত মেরিডিয়ান বিন্দুতে সূঁচ ঢুকিয়ে ‘চি’ এর প্রবাহ সক্রিয় হয়। ফলস্বরূপ, মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলি উজ্জীবিত হয়, রক্ত সঞ্চালন এবং অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্ক উদ্দীপিত হয়ে ব্যথানাশক রাসায়নিক উপাদান নিঃসারণ হয়।