আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জানুয়ারিতে, ভারতীয় ছাত্রী জাহ্নবী কান্দুলা একটি দ্রুতগামী মার্কিন পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান। তার মৃত্যুর পর সম্প্রতি সেই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে।
ভিডিওতে অট্টহাসিতে বলতে শোনা গেছে, ‘ও তো মারাই গিয়েছে। না না, ও তো গুরুত্বপূর্ণ কেউ না। ১১ হাজার ডলারের একটা চেক দিয়ে দিক ওকে… মেয়েটার বয়স ২৬। ওর জীবনের আর এমন কি দাম।’
কথাগুলো বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়্যাটল শহরের পুলিশ কর্মকর্তা ড্যানিয়েল অডারার। কথাগুলো বললেন ভারতীয় তরুণী জাহ্নবী কান্দুলাকে নিয়ে।
গত জানুয়ারিতে, সিয়্যাটল পুলিশ অফিসারের একটি দ্রুতগামী গাড়ির ধাক্কায় প্রায় একশো ফুট দূরে ধাক্কা খেয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন জাহ্নবী। দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত থেকে ফিরে আসার সময় ড্যানিয়েল ফোনে বা ওয়্যারলেসভাবে সিয়্যাটল পুলিশ অফিসার গিল্ডের প্রধান মাইক সোলানের সাথে কথা বলছিলেন।
কিন্তু তখন তিনি জানতেন না, তার শরীরে লাগানো ক্যামেরা (বডিক্যাম) চালু ছিল। ভারতীয় তরুণীর ‘জীবনের এমন কোনো দাম ছিল না’ কথাটি যখন তিনি বলছিলেন, তখন তা রেকর্ড হয়ে যায় সেই ক্যামেরায়। সিয়্যাটল পুলিশেরই এক কর্মী হঠাৎ এই কথোপকথনের ভিডিয়োটি দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপর শুরু হয় বিভাগীয় তদন্ত। স্বচ্ছতার যুক্তি দিয়ে ভিডিওটি সর্বসমক্ষে প্রকাশও করে দেয় সিয়্যাটল পুলিশ।
সেই ভিডিও দেখার পর জাহ্নবীর পরিবার, আমেরিকান রাজনীতিবিদ, অনাবাসী ভারতীয় এবং অনেক সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সান ফ্রান্সিসকোতে ভারতীয় দূতাবাস এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছে, ‘আমরা যথেষ্ট কড়া ভাবে বিষয়টি সিয়্যাটলের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং ওয়াশিংটনের উচ্চপদস্থ কর্তাদের জানিয়েছি।’
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তারানজিৎ সিং সান্ধু মার্কিন প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। জো বিডেন প্রশাসন ভারতকে দ্রুত তদন্ত এবং দোষী পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
জানভীরের এই ডিসেম্বরে নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক হওয়ার কথা ছিল। ২৩ জানুয়ারি জেব্রা ক্রসিং করে সিয়াটলের রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় ঘণ্টায় ১১৯ কিলোমিটার বেগে আসা পুলিশের একটি গাড়ি তাকে ধাক্কা দেয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরও বাঁচানো যায়নি জাহ্নবীকে।
সিয়্যাটল পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অফিসার কেভিন ডেভ ৯১১ নম্বরে কল পাওয়ার পর দ্রুত গতিতে ছিলেন। হঠাৎ জাহ্নবীকে সামনে দেখে কেভিন ব্রেক করেও সংঘর্ষ এড়াতে পারেননি।
ড্যানিয়েল, পুলিশ অফিসার গিল্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট, কেভিন সেই সময়ে বিচ্যুত ছিল কিনা তা তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।