জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহাদী হাসান দিপু একইসাথে ব্রিটিশ সরকারের সম্মানজনক চেভেনিং স্কলারশিপ, কমনওয়েলথ স্কলারশিপ এবং জাপান সরকারের মেক্সট স্কলারশিপ পেয়েছেন; যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম।
তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফমেশন সিস্টেমস বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে ২০১৪ সালে বিবিএ ও ২০১৬ সালে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ থেকে সিএ প্রথম লেভেল সম্পন্ন করেন। ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তিনি Rahman Rahman Haq Chartered Accounts এ সহকারী অডিটর হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন এবং বর্তমানে তিনি উক্ত বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
বৃত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে স্কলারশিপপ্রাপ্ত মাহাদী হাসান দিপু বলেন, ‘মেধা, দক্ষতা এবং যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত করা হয়। চেভেনিং স্কলারশিপ মূলত- সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট, লিডারশিপ এবং মেধা এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে দেওয়া হয়ে থাকে। অন্যদিকে অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স, রিসার্চ ও ফিউচার প্ল্যানের উপর নির্ভর করে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর গবেষণাপ্রেমী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের জন্য কমনওয়েলথ স্কলারশিপ প্রদান করা হয়ে থাকে। এছাড়াও জাপান সরকারের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের জন্য মেক্সট স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে।’
কমনওয়েলথ স্কলারশিপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কমনওয়েলথ স্কলারশিপের আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে অনেকজনকেই ভাইবার জন্য ডাকা হয়েছিল। এদের মধ্যে থেকে ৪০-৪৫ জনকে শর্টলিস্টেড করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে ১০ জনকে নির্বাচন করা হয়। বাছাইকৃতদের কমনওয়েলথের ওয়েবসাইট CSC তে ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে essay লিখে জমা দিতে হয়, যার ভিত্তিতে আমি চূড়ান্ত বৃত্তিপ্রাপ্ত হিসেবে নির্বাচিত হই।’
চেভেনিং স্কলারশিপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘চেভেনিং এ বাংলাদেশ থেকে ৩০০০ এর অধিক আবেদন করা হয়। এর মধ্যে থেকে আমরা ৬০ জন টক UK Embassy তে ইন্টারভিউয়ের জন্য নির্বাচত হই। সেখানে ৬০ জন প্রার্থীর মধ্যে থেকে ২০ জনকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়। চেভেনিং স্কলারশিপেও কমনওয়েলথ স্কলারশিপের মতো চারটি বিষয়ে essay লিখে ইন্টারভিউয়ের জন্য শর্টলিস্টেড হতে হয়।Essay গুলোর বিষয় হচ্ছেঃ লিডারশিপ, নেটওয়ার্কিং অ্যাবিলিটি, ক্যারিয়ার প্ল্যান এবং প্রপোজড স্টাডি ইন টক। এই বিস্তর প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আমি একজন চেভেনিং স্কলার হিসেবে মনোনীত হই।’
তিনি আরো জানান, ‘এবছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারজন নমিনেশন পেয়েছিল, যার মধ্যে একজনকে মনোনীত করা হয়। চেভেনিং স্কলারশীপের জন্যও একজনকে মনোনীত করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর থেকে এর আগে কেউ একইসঙ্গে দুইটি স্কলারশীপের জন্য মনোনীত হয়নি। তাই এটি আমার ও আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটা গর্বের বিষয়।’
অনুজদের প্রতি দিকনির্দেশনা-স্বরূপ তিনি বলেন, ‘ইচ্ছাশক্তি থাকলে স্কলারশীপের এই যাত্রা যেকোনো সময় শুরু করা সম্ভব। আমি এই বছর দুয়েক আগে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য মনস্থির করি অর্থাৎ শিক্ষকতা পেশায় আসার পরবর্তী সময়ে। তাই বিদেশে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হলে দেরি না করে সঠিক গাইডলাইন অনুযায়ী প্ল্যানমাফিক আগানো উচিৎ।’