আমরণ অনশনে জাবির কর্মচারীরা

আমরণ অনশনে জাবির কর্মচারীরা

শিক্ষা

জাবি প্রতিনিধি:
চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে টানা ১৪ দিন ধরে অবস্থান ধর্মঘট পালন করার পর প্রশাসন থেকে কোন আশ্বাস না পাওয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীরা এবার আমরণ অনশনে গেল।

গত ১৭ জুলাই থেকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে চাকরী স্থায়ী দাবিতে ধর্মঘট পালন করছেন দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মচারীরা। অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা এই অবস্থান ধর্মঘট ১৪ দিন গড়ালেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে কোন খোঁজ খবর না নেওয়ার অভিযোগ জানান তারা।

দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করা বেগম সুফিয়া কামাল হলের মালি কাউসার হোসেন জানান, আজ আমাদের অবস্থান ধর্মঘট ১৪দিনে গড়ালো, অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এখনো লিখিত কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়নি। তারা বারংবার মৌখিকভাবে আমাদের আশ্বাস দিচ্ছে। প্রশাসন থেকে আমাদের বলা হচ্ছে পর্যায়ক্রমে চাকরি স্থায়ী করা হবে। কিন্তু সেটাও তারা মৌখিকভাবে বলছে।

ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ও গবেষণা কেন্দ্রের কর্মচারী সোহেল বলেন, অসুস্থ কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে খোঁজ নেওয়া হয়না তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, টানা ১৪ দিনের অবস্থান ধর্মঘটে আমাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ১৯ জন ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি আছে। কিন্তু প্রশাসন থেকে এখনো আমাদের কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়না।

আন্দোলনরত একাধিক কর্মচারীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪২ জন অস্থায়ী কর্মচারী আছেন। যাদের দৈনিক ৪০০ টাকা হারে মজুরি দেওয়া হয়, যা বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী খুবই স্বল্প। এতে করে তারা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

জানা যায়, চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমরা তিনবার প্রশাসনকে স্বারকলিপি দেওয়া হয়েছে। একই দাবিতে মানববন্ধন করা হলে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার অস্থায়ী কর্মচারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরি স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেন। সবশেষ চলতি বছরের ২ জানুয়ারি চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরণ অনশনে বসে কর্মচারীরা। তখন প্রশাসন ছয় মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও অফিসগুলোয় নিয়োগের মৌখিক আশ্বাস দেন। তবে ছয় মাস অতিবাহিত হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবারও অবস্থান ধর্মঘটে বসেছে কর্মচারীরা।

এদিকে চাকরি স্থায়ীকরণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত ২৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের(ইউজিসি) সাথে আলোচনা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এতেও কর্মচারীদের জন্য সুখকর কিছু হয়নি বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনরত কর্মচারী শরিফ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা জেনেছি ২৭ তারিখ ইউজিসির সাথে আলোচনায় বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু আলোচনার পর কি সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা ঠিক জানিনা। আমাদের বারংবার মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে পর্যায়ক্রমে চাকরি স্থায়ী করা হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, চাকরি স্থায়ী করার সিদ্ধান্ত ইউজিসি থেকে নেওয়া হয়। ২৯ জুলাই শনিবার ইউজিসির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁদের মধ্যে থেকে ধাপে ধাপে চাকরি স্থায়ী করার জন্য অনুরোধ করে। তবে ইউজিসির চেয়ারম্যান কয়েকটি পদ দেবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। তবে চেয়ারম্যান ইউজিসির বাকি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *